শাস্ত্র বলে, “তাঁহদের (মনুষ্যদের) সর্ব্বদাই প্রার্থনা করা উচিত, নিরুৎসাহ হওয়া উচিত নয়” (লূক ১৮ : ১) কিন্তু লোকে যদি কখনও প্রার্থনা করিবার আবশ্যকতা উপলব্ধি করে, তবে যখন বল হ্রাস পায়, এবং প্রাণ ওষ্ঠাগত হয়, কেবল তখনই প্রার্থনা করিবার সময় বলিয়া তাহারা মনে করে। যাহারা স্বাস্থ্যবান, দিনের পর দিন ও বৎসরের পর বৎসর তাহারা যে সকল আশ্চর্য্য অনুগ্রহ প্রাপ্ত হইয়া আসিতেছে, প্রায়ই তাঁহার তাহা ভুলিয়া যায় এবং ঈশ্বরের বহুবিধ উপকারের জন্য তাঁহার প্রশংসা কীর্ত্তন করে না। কিন্তু যখন রোগাক্রান্ত হয়, তখনই তাহারা ঈশ্বরকে স্নরণ করে। যখন মানবীয় শক্তি নিষ্ফল হইয়া যায়, তখন তাহারা ঐশ্বরিক সাহায্যের আবশ্যকতা অনুভব করে। যাহারা সরল অন্তঃকরণে ঈশ্বরের সাহায্যের আবশ্যকতা অনুভব করে। যাহারা সরল অন্তঃকরণে ঈশ্বরের সাহায্য ভিক্ষা করে, কৃপাময় ঈশ্বর তাহদের কাহাকেও কখনও বিমুখ করেন না। স্বাস্থ্যে যেমন, পীড়ায়ও তেমনি, তিনি আমাদের আশ্রয় ও বল। CCh 589.1
পার্থিব পরিচয্যাকালে খ্রীষ্ট যেরূপ দয়ালু চিকিৎসক ছিলেন, এখন ও তিনি ঠিক্ সেইরূপই আছেন। তাঁহাতেই প্রতোক রোগের আরোগ্যকারি-মলম ও চির-রোগ-নাশক-শক্তি রহিয়াছে। পুরাকালের শিষ্যগণ যেমন পীড়ার জন্য প্রার্থনা করিয়াছিলেন, বর্ত্তমানকালের শিষ্যগণও ঠিক্ তেমনি ভাবে প্রার্থনা করিলে আরোগ্য সুনিশ্চিত; কারণ বিশ্বাসের প্রার্থনা সেই পীড়িত ব্যক্তিকে সুস্থ করিবে, ইহাই শাস্ত্রের প্রতিজ্ঞা। পবিত্র আত্মার শক্তি আমাদের আছে, ইহা বিশ্বাসের সুনিশ্চিত আশ্বাস; এই বিশ্বাসের বলে আমরা ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাসমূহের দাবী করিতে পারি। তাহারা পীড়িতের উপরে হস্তার্পণ করিবে, আর তাহারা সুস্থ হইবে,” (মার্ক ১৬ : ১৮) প্রভুর এই প্রতিজ্ঞা প্রেরিতদের যুগে যেমন, এখনও ঠিক্ তেমনি বিশ্বাস যোগ্য। ইহা ঈশ্বরের সন্তান গণের সুযোগ দেখাইয়া দেয়, আর বিশ্বাসের দ্বারা ঐ সকল সুযোগ ধরিয়া রাখা আমাদের একান্ত আবশ্যক। খ্রীষ্টের দাসগণ তাঁহার কার্য্যের উপায় বা প্রণালী স্বরূপ, এবং তাঁহার মাধ্যমে তিনি তাঁহার সুস্থকারী শক্তি প্রকাশ করিতে চাহেন। পীড়িত ও ক্লিষ্টগণকে বিশ্বাসের বাহুতে বহন করিয়া লইয়া ঈশ্বরের নিকটে উপস্থিত করাই আমাদের কার্য্য। তাহাদিগকে আমাদের শিক্ষা দিতে হইবে, যেন তাহারা মহান্ চিকিৎসকের উপরে বিশ্বাস রাখে। ত্রাণকর্ত্তা চাহেন যেন তাঁহার শক্তির উপরে নির্ভর রাখিতে পীড়িত, আশাহীন ও ক্লিষ্টদিগকে আমরা উৎসাহিত করি। CCh 589.2