যখন পৌলকে বিচারের জন্য সম্রাট নীরোর সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য সমন জারি করা হল, তখন তাঁর নিশ্চিত মৃত্যু যে সনিড়বকট সেটি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগের গুরুতর প্রকৃতি এবং খ্রীষ্টিয়ানদের প্রতি সর্বব্যাপী বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবের ফলে আনুক‚ল্য লাভের জন্য আশা করা যায় এমন সামান্য ভিত্তি আর রইল না। AABen 412.1
রোমীয় এবং গ্রীকদের মধ্যে একটা প্রথা চালু ছিল, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি ন্যায় বিচারের জন্য তার পক্ষে আবেদন করার জন্য একজন আইনজীবি নিয়োগ করতে পারত। বাদানুবাদের চাপের ফলে, আবেগপূর্ণ বাকপটুতার দ্বারা, অথবা অনুনয়, আবেদন ও চোখের জলের মাধ্যমে একজন উকিল প্রায়শই বন্দীর অনুক‚লে যেন রায় যায় সেটা নিশ্চিত করতে সক্ষম হতেন। আবার এতেও ব্যর্থ হলে প্রবল যুক্তি তর্কের দ্বারা দন্ডাদেশ লঘু করতেন। কিন্তু নীরোর সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য যখন পৌলকে সমন জারি করা হল, তখন তাঁর পরামর্শতাকা কিংবা উকিল হিসেবে কাজ করার জন্য কোন ব্যক্তি সাহসপূর্বক এগিয়ে আসেনি; এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগসমূহের কিংবা তাঁর নিজের সমর্থনে তিনি যে বাদানুবাদ করবেন তার বিবরণ সংরক্ষণ করার মত কোন বন্ধু তাঁর পাশে ছিল না। রোম শহরে বসবাসকারী এমন একজন খ্রীষ্টিয়ান ছিল না যে তাঁর এই মহা কষ্টের সময় তাঁর পাশে এসে দাঁড়াতে পারেন। AABen 412.2
এই ঘটনার একমাত্র বিশ্বাসযোগ্য বিবরণ পৌল নিজে প্রদান করেছেন। তীমথির কাছে লেখা তাঁর দ্বিতীয় পত্রে তিনি লিখেছেন, “আমার প্রথম বার আত্মপক্ষসমর্থন কালে কেহ আমার পক্ষে উপস্থিত হইল না; সকলে আমাকে পরিত্যাগ করিল; ইহা তাহাদের প্রতি গণিত না হউক। কিন্তু প্রভু আমার নিকটে দাঁড়াইলেন, এবং আমাকে বলবান করিলেন, যেন আমা দ্বারা প্রচার—কার্য সম্পন্ন হয় এবং পরজাতীয় সকল লোক তাহা শুনিতে পায়; আর আমি সিংহের মুখ হইতে রক্ষা পাইলাম।” ২ তীমথি ৪:১৬—১৭। AABen 412.3
নীরোর সামনে পৌল — কী বিস্ময়কর বৈষম্য! একজন উদ্ধত সম্রাটের সামনে ঈশ্বরের একজন লোক, যিনি তাঁর বিশ্বাসের জন্য জবাবদিহি করছেন এমন একজন লোকের সামনে যিনি জাগতিক ক্ষমতা, কর্তৃত্ব এবং সম্পদের উচ্চ শিখরে আরোহণ করে আছেন, একই ভাবে অপরাধ এবং অন্যায়ের গভীরতম তলানিতে পৌছেছেন। ক্ষমতা এবং মহত্বে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্ব›দ্বী। তার কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্নব ও প্রতিবাদ করার মত কেউ ছিল না, এমন কেউ ছিল না যে তার ইচ্ছাকে প্রতিরোধ করতে পারে। রাজারা তাদের মাথার মুকুট নীরোর পায়ের কাছে রাখতেন। বলিষ্ঠ সৈন্যবাহিনী তার আদেশে সামনে এগিয়ে যেত এবং তার নৌবাহিনী প্রত্যেকটি যুদ্ধেই বিজয় সঙ্কেতের পতাকা ওড়াত। বিচার কক্ষে তার মূর্তি স্থাপিত ছিল। রাষ্ট্রীয় পরিষদবর্গের ডিক্রি এবং বিচারকের সিদ্ধান্তসমূহ ছিল কেবল তাঁর ইচ্ছারই প্রতিধ্বনি। লক্ষ লক্ষ লোক কেবল তার আদেশের প্রতি বাধ্যতায় মাথা নত করত। সমস্ত পৃথিবীর কাছে নীরো ছিল একটি মহা আতঙ্ক সৃষ্টিকারী নাম। যদি কেউ তার অসন্তোষের পাত্র হত তাহলে সে তার সৌভাগ্য, স্বাধীনতা ও জীবন হারাতো। সম্রাট নীরো ভ্রæকুটি ছিল মহামারীর চেয়েও ভয়ঙ্কর। AABen 413.1
নিঃস্ব, সঙ্গীহীন ও কোন আইনজীবী না নিয়েই বৃদ্ধ বন্দী দাঁড়িয়েছিলেন নীরোর সামনে — তার বিরুদ্ধে আনীত যে ঘৃণার লজ্জাজনক বিবরণ যার মধ্যে ক্রোধও রয়েছে, সেই বিষয়ে সম্রাটের সমর্থন লাভের আশা করেছিলেন তিনি; অভিযুক্ত ব্যক্তির মুখ হৃদয়ের মধ্যে থাকা ঈশ্বরের শান্তির কথা বলছে। পৌলের অভিজ্ঞতার অন্যতম দিক ছিল তাঁর দারিদ্র, আত্মত্যাগ ও কষ্টভোগ। অব্যাহত মিথ্যা অভিযোগ, নিন্দা ও অন্যায় আচরণ, যার দ্বারা তাঁর শত্রুরা তাঁকে ভীতি প্রদর্শন করার চেষ্টা চালিয়েছিল, তা সত্তে¡ও তিনি নির্ভীকভাবে ক্রুশের পতাকা উঁচুতে তুলে ধরেছিলেন। তাঁর প্রভুর মত তিনিও ছিলেন গৃহহীন ভ্রমণকারী এবং তাঁর মত মানবজাতিকে আশীর্বাদ করার জন্য তিনি বেঁচে ছিলেন। নীরোর মত একজন অস্থিরমতি, আবেগপ্রবণ, লম্পট স্বৈরশাসক কীভাবে ঈশ্বরের সন্তানকে বুঝতে পারবেন বা তাঁর চরিত্র ও উদ্দেশ্যের মূল্যায়ন করতে পারবেন? AABen 413.2
বিশাল বিচারকক্ষের ক্রোধে পূর্ণ ও অস্থির জনতা পৌলের ভাগ্যে কী ঘটে তা সামনে থেকে সব কিছু শোনার ও দেখার জন্য প্রচন্ড ভিড় করছিল ও চাপাচাপি করছিল। সেই জনতার মধ্যে ছিল উঁচু ও নিচু শ্রেণীর লোক, ধনী ও দরিদ্র, শিক্সিত ও অজ্ঞ, অহঙ্কারী ও নম্র লোক। এরা সবাই একইভাবে জীবন ও পরিত্রাণের পথের প্রকৃত জ্ঞান থেকে বঞ্চিত ছিল। AABen 413.3
যিহূদীরা পৌলের বিরুদ্ধে উস্কানি দেওয়ার এবং প্রচলিত ধর্মমতের পরিবর্তে নতুন ধর্ম প্রচলনের পুরাতন অভিযোগ উপস্থাপন করেছিল এবং যিহূদী ও রোমীয়রা উভয়ে রোম শহর আগুনে পুড়িয়ে দেবার জন্য প্ররোচিত করার অভিযোগ এনেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যখন এই সব অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে আরোপ করা হল তখন পৌল নিরবচ্ছিনড়ব প্রশান্তিতে পূর্ণ ছিলেন। জনতা এবং বিচারকেরা তাঁর দিকে বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে ছিলেন। তারা অনেক বিচারকার্যের সময় উপস্থিত ছিলেন এবং অনেক অপরাধীর দিকে দৃষ্টিপাত করেছিলেন, কিন্তু তাদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা বন্দী হিসেবে পৌলের মুখমন্ডলে যে স্বর্গীয় প্রশান্তি ব্যাপ্ত হয়ে থাকতে তারা দেখেচিলেন ইতোপূর্বে কখনোই আর কোন বন্দী মধ্যে এই বিষয়টি তারা দেখতে পাননি। বন্দীদের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে তার পাপ বুঝতে পারার বিষয়ে বিচারকেরা অভ্যস্ত। পৌলের মুখের দিকে পর্যবেক্ষণের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলেও তাঁর দোষের কোন প্রমাণ লাভ করতে তারা ব্যর্থ হয়েছিল। যখন তিনি তাঁর নিজের পক্ষে কথা বলার জন্য অনুমতি পেলেন, তখন সবাই গভীর আগ্রহের সঙ্গে তা শুনছিল । AABen 414.1
পৌল আর একবার সুযোগ পেলেন কৌত‚হলী অসংখ্য জনতার সামনে ক্রুশের পতাকা উঁচু করে তুলে ধরার। তিনি সামনে তাঁড়িয়ে থাকা বিশাল জনতার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালেন — তিনি দেখতে পেলেন এই জনতার মধ্যে রয়েছে যিহূদী, গ্রীক, রোমীয় এবং বিভিনড়ব দেশ থেকে আগত বিদেশীরা — এর ফলে তাঁর মনে তাদের পরিত্রাণের জন্য তীব্র আকাঙ্ক্ষা জেগে উঠল। তিনি তার এই অবস্থান কথা ভুলে গেলেন যে, ভয়ানক বিপদ তাঁর চারপাশে ঘিরে রয়েছে, ভয়ঙ্কর পরিণতি তাঁর অতি নিকটবর্তী হয়েছে। তাঁর দৃষ্টি অন্যত্র সরে গেল। তিনি কেবল যীশুকে দেখতে পেলেন, যিনি পাপী মানুষের পক্ষে ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে অনুরোধ করছেন। মানবীয় বাগ্মিতা এবং ক্ষমতার চেয়ে আরও অধিক বাগ্মিতা এবং ক্ষমতা দিয়ে পৌল সুসমাচারের সত্য জনতার সামনে তুলে ধরলেন। পতিত মানবজাতির মুক্তির জন্য জীবন উৎসর্গের যে কার্য সাধিত হয়েছে সেই দিকে তিনি শ্রোতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করলেন। তিনি সুস্পষ্টভাবে বললেন যে, মানুষের মুক্তির জন্য অসীম মূল্য পরিশোধ করতে হয়েছে। ঈশ্বরের সিংহাসনে তাদের অংশী হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সংবাদদাতা স্বর্গদূতদের মাধ্যমে স্বর্গের সঙ্গে পৃথিবীতে যুক্ত হয়েছে এবং মানুষের সমস্ত কার্য, ভাল হোক কি মন্দ হোক, তা স্বর্গীয় বিচারকের চোখের সামনে উন্মুক্ত রয়েছে। AABen 414.2
সত্যের পক্ষাবলম্বনকারী এভাবে অনুরোধ করে থাকেন। অবিশ্বস্তদের মধ্যে বিশ্বস্ত, অবাধ্যদের মধ্যে অনুগত হয়ে তিনি ঈশ্বরের প্রতিনিধি স্বরূপ দাঁড়ালেন, এবং তাঁর কণ্ঠস্বর স্বর্গ থেকে আসা কণ্ঠস্বরের মত শোনাল। যেখানে কোন ভয় নেই, কোন দুঃখ কষ্ট নেই, নিরুৎসাহজনক কোন কথা নেই বা দৃষ্টি নেই, নিষ্পাপতার চেতনায় বলীয়ান হয়ে, সত্যের রণসজ্জা পরিহিত হয়ে তিনি আনন্দ করছেন যে, তিনি ঈশ্বরের সন্তান। তাঁর কণ্ঠস্বর ছিল যুদ্ধক্ষেত্রের গর্জন ছাপিয়ে ওঠা বিজয়ীর চিৎকারের মত। যে উদ্দেশ্যে তিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন সেই বিষয়টি তিনি প্রকাশ করেছেন, কারণ তিনি জানেন তা কখনো ব্যর্থ হবে না। যদিও তিনি বিপদগ্রস্থ রয়েছেন, কিন্তু সুসমাচার বিপদগ্রস্থ হবে না। জীবন্ত ঈশ্বর এবং তাঁর সত্য বিজয়ী হবে। AABen 415.1
সেদিন অনেকে তাঁর দিকে তাকিয়ে “দেখিল তাঁর মুখ স্বর্গদূতের মুখের তুল্য।” প্রেরিত ৬:১৫। AABen 415.2
এই জনতা ইতোপূর্বে আর কখনও এই রকম কথা শোনেনি। তারা এমনভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হল যে, তাদের অন্তর প্রবলভাবে কম্পিত হল। সত্য বিশ্বাসকে স্পষ্ট করে, ভ্রান্তিকে অপসারিত করে। অনেকের মনে উজ্জ্বল হয়ে আলো জ্বলেছে এবং তারা আনন্দিত মনে এর রশ্মি অনুসরণ করেছে। ঐ দিন যে সত্য প্রকাশ করা হয়েছিল তা জাতিকে নাড়া দেবার বিষয়টি এবং সর্ব সময় জীবন্ত থাকার বিষয়টি ছিল পূর্ব নির্ধারিত। যখন মুখ দিয়ে তা প্রকাশ করা হয়েছিল তখন সাক্ষ্যমরের সমাধির নিস্তব্ধতা তার মধ্যে বিরাজ করছিল। AABen 415.3
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সত্য সম্পর্কে নীরো যেভাবে শুনেছিলেন, ইতোপূর্বে সেই ভাবে কখনোই শোনেননি। তার জীবনে অসংখ্য অপরাধ যেভাবে তার কাছে প্রকাশ করা হয়েছিল তা ইতোপূর্বে কখনো প্রকাশ করা হয়নি। স্বর্গের আলো তার পাপ কলুষিত হৃদয়ের কক্ষগুলো বিদ্ধ করেছিল এবং জগতের শাসনকর্তার বিচারাসনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার কথা ভেবে তিনি মহা ভয়ে কেঁপে উঠলেন, যেখানে সব কিছুর চ‚ড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হবে এবং তার কার্যসমূহ বিচারের ফল লাভ করবে। তিনি প্রেরিতের প্রচারিত ঈশ্বরের ভয়ে ভীত হলেন এবং তিনি পৌলের কথার উপর আর কোন কথা বলতে সাহস পেলেন না, কাজেই তাঁর বিরুদ্ধে আর কোন অভিযোগ বলবৎ রইল না। ভক্তি ও ভয়ের চেতনায় কিছু সময়ের জন্য তার রক্তপিপাসু মন নিয়ন্ত্রিত হল। AABen 415.4
কিছু সময়ের জন্য অপরাধী এবং কঠিন হৃদয়ের নীরোর কাছে স্বর্গ খুলে গেল এবং এর শান্তি ও পবিত্রতা কাম্য বলে প্রতীয়মান হল। সেই মুহূর্তে দয়ার আমন্ত্রণ তার দিকে প্রসারিত হল। কিন্তু কেবল কিছু সময়ের জন্য ক্ষমার চিন্তা সমাদৃত হয়েছিল। এরপর এই আদেশ দেওয়া হল যেন পৌলকে আবার তার অন্ধকারাক‚পে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়; আর যেভাবে ঈশ্বরের সুসমাচার প্রচারকের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তার ফলে রোম সম্রাটের সামনে অনুতাপের দরজাও চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যে অন্ধকার তাকে আবৃত করেছে সেই অন্ধকারের মধ্যে আর কখনো স্বর্গ থেকে আলোর রশ্মি প্রবেশ করবে না। খুব শীঘ্র তিনি ঈশ্বরের বিচারে শাস্তি স্বরূপ কষ্টভোগ করবেন। AABen 416.1
এই ঘটনার পর বেশি দিন অতিবাহিত হয়নি, এর মধ্যে নীরো গ্রীসের দিকে তার কুখ্যাত নৌসেনা নিয়ে যুদ্ধ যাত্রা করলেন। সেখানে তিনি তিনি নিজেকে অসম্মানিত করলেন এবং তার রাজ্য ঘৃণ্য ও অধঃপতনের দ্বারা তুচ্ছীকৃত হল। মহা ধুমধামের সাথে রোমের দিকে প্রত্যাবর্তনের সময় তিনি তার আমত্যদের সাথে পরিবেষ্টিত হয়েছিলেন এবং ঘৃণ্য পাপাচারের কাজে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছিলেন। এই আনন্দ অনুষ্ঠানের মাঝামাঝি সময় রাস্তার প্রচন্ড কোলাহল আর চিৎকারের শব্দ শোনা গেল। একজন সংবাদদাতা এর কারণ ব্যক্ত করল। একটি আতঙ্কজনক সংবাদ দেওয়া হল যে, সেনাপ্রধান গ্যালবা দ্রুতবেগে রোম দখলের মানসে এগিয়ে যাচ্ছে। এই অভ্যুত্থানে ইতোমধ্যে শহরের বাইরে ঘটে গেছে এবং ঐ রাস্তাগুলো ক্রুদ্ধ জনতা দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেছে, যা সম্রাট এবং তাঁর সমর্থকদের মৃত্যুর হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়াল এবং এটি অতি দ্রুত রাজপ্রাসাদে পৌঁছে গেল। AABen 416.2
এই ভয়ানক বিপদের সময় নীরো বিশ্বস্ত পৌলের মত আচরণ করেননি, যিনি ক্ষমতাবান এবং দয়াময় ঈশ্বরের উপর সব ভার অর্পণ করেছিলেন। কষ্টভোগ করার ভীতি এবং সম্ভাব্য অত্যাচারের আতঙ্কে পূর্ণ হয়ে তিনি বুঝতে পারলেন, জনতার হাতে কষ্টভোগ করতে এবং অত্যাচারিত হতে তিনি বাধ্য। এই শোচনীয় অবস্থায় পড়ে নৃশংস শাসক চিন্তা করলেন যে, তিনি নিজের হাতে তাঁর জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটাবেন। কিন্তু এই ভয়াবহ অবস্থায় তিনি তার সাহস হারিয়ে ফেললেন। সম্পূর্ণভাবে দিকভ্রান্ত হয়ে অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে শহর থেকে পালিয়ে তিনি কয়েক মাইল দূরে গ্রামের একজন সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির গৃহে আশ্রয় নিতে চাইলেন। কিন্তু কোন কিছুই তার উপকারে এল না। তার অজ্ঞাতবাস খুব শীঘ্র আবিষ্কৃত হল। পশ্চাৎধাবনকারী অশ্বারোহীর তার খোঁজ পেয়ে গেল। তিনি একজন ক্রীতদাসকে সাহায্য করার জন্য ডাকলেন এবং নিজেই নিজের প্রাণ কেড়ে নিলেন। এভাবেই নিষ্ঠুর নীরো চিরতরে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেন। AABen 416.3