যিহুদী অর্থ নীতিতে প্রত্যেক ব্যক্তির আয়ের দশ ভাগের এক ভাগ মন্ডলীর আরাধনার জন্য পৃথক করে রাখা হত। “দশ ভাগের এক ভাগ সদাপ্রভুর; তাহা সদাপ্রভুর উদ্দেশে পবিত্র।” লেবীয় ২৭:৩০। কিন্তু এই দশমাংশ প্রথা যিহুদীর সময় হতে শুরু হয় নি। প্রাচীনকাল হতেই সদাপ্রভু দশমাংশ (দশ ভাগের এক ভাগ) তাঁর নিজের জন্য দাবী করেছেন । অব্রাহাম ঈশ্বরের যাজক মল্কীষেদকের নিকট দশমাংশ দিয়েছিলেন। আদিপুস্তক ১৪:২০ । যাকোব ঈশ্বরের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, “আর তুমি আমাকে যে কিছু দিবে, তাহার দশ ভাগের এক ভাগ আমি তোমাকে অবশ্য দিব।” আদিপুস্তক ২৮:২২। ঈশ্বরই হলেন তাঁর সৃষ্ট জীবের প্রতি সকল আশীর্বাদের উস, এবং তাঁর কাছেই মানুষকে কৃতজ্ঞ থাকতে হবে । PPBeng 377.1
সদাপ্রভু ঘোষণা করেন, “রৌপ আমারই, স্বর্ণও আমারই।” হগয় ২৪৮। ঈশ্বর মানুষকে সম্পদ সংগ্রহ করার ক্ষমতা দান করে থাকেন। তাই ঈশ্বর নির্দেশ দিয়েছেন যে সব কিছু তাঁর কাছ থেকেই যে এসেছে তার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ কিছু অংশ তাঁকে দিতে হবে । PPBeng 377.2
“সমস্ত দ্রব্যের দশ ভাগের এক ভাগ সদাপ্রভুর।” সপ্তম দিন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশে বিশ্রামদিন।” যাত্রা ২০:১০। ঈশ্বর মানুষের সময় ও তার সম্পদের একটি নির্দিষ্ট অংশ তাঁর নিজের জন্য নির্দ্ধারিত করেছেন, আর কোন ব্যক্তিই নির্দোষরূপে এর কোনটিই নিজে জন্য আত্মস্মা করতে পারে না। PPBeng 377.3
ধর্মধামের সেবা কার্য্যের জন্য যে লেবীয়দের পৃথক করা হয়েছিল, দশমাংশ সম্পূর্ণরূপে তাদের জন্যই নির্ধারিত ছিল। কিন্তু ধার্মিকের জন্য দান করার ব্যাপারে কোন মতেই এটিই একমাত্র নির্ধারিত দান ছিল না। ধর্মধাম, আর পরবর্তীতে অন্যান্য মন্দির, একমাত্র মানুষের স্বেচ্ছায় দান থেকে নির্মিত হয়েছিল; আর স্বেচ্ছা-দান থেকেই এগুলির মেরামত ইত্যাদি করা হত । মোশি নির্দেশ দিয়েছিলেন যে “আবাসের সেবা কাজ করিবার জন্য” প্রত্যেকে আধা শেকল (সে কালের টাকা) করে দান করবে। মাঝে মাঝে প্রায়শ্চিত্ত ও ধন্যবাদের চাঁদা ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত করা হত। আর গরীবের অন্য বিশেষ ধরনের উদার ব্যবস্থা ছিল । PPBeng 377.4
লোকদের প্রায়ই স্মরণ করানো হত যে তাদের জমির, তাদের পশুর, ও তাদের মেষপালের প্রকৃত মালিক হলেন ঈশ্বর। তিনি তাদের বীজ বপনের সময় ও শস্য কাটার সময় রোদ ও বৃষ্টি দিয়ে থাকেন, আর তিনি তাদের তাঁর সম্পত্তির রক্ষকরূপে নিযুক্ত করেছেন। PPBeng 378.1
যখন ইস্রায়েলরা তাদের মাঠের, বাগানের ও আঙ্গুর ক্ষেতের প্রথম ফল নিয়ে সমাগম-তাম্বুর সামনে একত্রিত হত, তখন সর্ব-সাধারণের সম্মুখে ঈশ্বরের আশীর্বাদ ও অনুগ্রহের স্বীকার করা হত। যখন যাজক দান গ্রহণ করতেন, তখন দাতা বলতেন, “একজন নষ্টকল্প সিরিয়াবাসী আমার পূর্বপুরুষ ছিলেন;” আর সে তখন মিসরে তাদের সাময়িক অবস্থান ও যে কষ্ট ও যাতনা হতে ঈশ্বর ইস্রায়েলদের রক্ষা করেছিলেন তার বর্ণনা করত, “আর তিনি আমাদিগকে এই স্থানে আনিয়াছেন, এবং এই দেশ, দুগ্ধমধুপ্রবাহী দেশ দিয়াছেন। এখন, হে সদাপ্রভু, দেখ, তুমি আমাকে যে ভূমি দিয়াছ, তাহার ফলের অগ্নিমাংশ আমি আনিয়াছি।” দ্বিতীয় বিবরণ ২৬৪৫, ৯, ১০। PPBeng 378.2