ইতিমধ্যে যিরূশালেমেও খবর পৌছাল। দায়ূদ সহসা দেখতে পেলেন যে তার সিংহাসনের অত্যন্ত কাছেই বিদ্রোহ শুরু হয়েছে। তার নিজের ছেলেই সিংহাসন দখল করতে ও তার জীবন হরণ করতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এই মহা বিপদে দায়ূদ যে হতাশা তাকে অনেকদিন পর্যন্ত দুর্বল করে রেখেছিল তা ঝেড়ে ফেলেন এবং এই প্রচন্ড আকস্মিক বিপদ মোকাবেলার প্রস্তুতি নিলেন। অবশালোম মাত্র বিশ মাইল দূরে রয়েছেন। শীঘ্রই বিদ্রোহীরা যিরূশালেমের সদর দরজায় উপস্থিত হবে। PPBeng 532.3
তার রাজধানী হত্যা ও ধ্বংসের লীলাক্ষেত্রে পরিণত হতে পারে। এই চিন্তা দায়ূদকে বিচলিত করল। তিনি কি যিরূশালেমে রক্তের বন্যা বয়ে যাবার অনুমতি দেবেন? তিনি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। তিনি যিরূশালেম পরিত্যাগ করে চলে যাবেন এবং তার লোকদের সুযোগ দেবেন যেন তারা তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। ঈশ্বরের প্রতি ও তার লোকদের প্রতি তার কর্তব্য হল যেন ঈশ্বর তাকে যে কর্তৃত্ব দিয়েছেন, তা তিনি রক্ষা করেন। PPBeng 532.4
দুঃখে ও অপমানে দায়ূদ যিরূশালেমের সদর দরজা পার হয়ে চললেন। লোকেরাও এক মৃত্যুর মিছিলের মত দীর্ঘ ও শোকাহত শোভাযাত্রা করে তার পেছনে পেছনে চল্ল। করেথীয়, পলেথীয় ও গাবীয়রা ছিল দায়ূদের দেহ রক্ষী দল, তারা গাতীয় ইওয়ের পরিচালনায় রাজার সাথে চল । কিন্তু তার স্বাভাবিক স্বার্থপরতায় দায়ূদ এতে মত দিতে পারলেন না যে এই পরদেশীরা তার এই দুর্যোগের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তখন রাজাই ইওয়কে বললেন, “আমাদের সংগে তুমিও কেন যাইবে?...তুমি বিদেশী এবং নির্বাসিত লোক,...তুমি কালমাত্র আসিয়াছ, অদ্য আমি কি তোমাকে আমাদের সহিত ভ্রমণ করাইব? আমি যেখানে পারি, সেখানে যাইব, তুমি ফিরিয়া যাও; নিজ ভাইদিগকেও লইয়া যাও, দয়া ও সত্য তোমার সংগে থাকুক।” PPBeng 533.1
ইত্তয় উত্তর দিলেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, এবং আমার প্রভু মহারাজের প্রাণের দিব্য, জীবনের জন্য হউক, কিংবা মরণের জন্য হউক, আমার প্রভু মহারাজ যে স্থানে থাকিবেন, আপনার দাস ও সেই স্থানে অবশ্যই থাকিবে।” এই লোকেরা পৌত্তলিকতা পরিত্যাগ করে ধর্ম গ্রহণ করেছিল এবং তারা ঈশ্বরের ও রাজার প্রতি তাদের মহান আনুগত্যের পরিচয় ছিল। তার দৃশ্যতঃ পরাজিত লক্ষ্যের প্রতি তাদের বাধ্যতাকে দায়ূদ গ্রহণ করে নিলেন, আর সকলেই কিদ্রোন স্রোত পার হয়ে মরু-প্রান্তরের দিকে চললেন। PPBeng 533.2