ঈশ্বরের বাক্যে অনেক প্রশ্ন তোলা হয়েছে যার উত্তর পন্ডিতেরা দিতে পারেন না । দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ জিনিসের মধ্যে এমন অনেক কিছু আছে যা সীমিত বুদ্ধিমান তার অনেক গর্ব থাকা সত্বেও সম্পূর্ণরূপে বুঝতে সক্ষম হয় না । PPBeng 69.2
তথাপি বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে তারা ঈশ্বরের জ্ঞান পূর্ণ হৃদয়ঙ্গম করতে সক্ষম। তাদের মনে এই ধারণা রয়েছে যে তিনি তার নিজের নিয়ম কানুন দ্বারা আবদ্ধ। মানুষ হয় তার অস্তিত্বের অবহেলা করে নতুবা অস্বীকার করে অথবা সমস্ত কিছু ব্যাখ্যা করার জন্য চিন্তা করে, এমন কি মানুষের হৃদয়ে তার আত্মার কাজ পর্যন্ত ব্যাখ্যা করতে চায়। আর ফলে তাঁরা তার নামের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে না । PPBeng 69.3
অনেকে শিক্ষা দেন যে প্রকৃতির সমস্ত কিছু নির্দিষ্ট নিয়মের আওতায় চলে যেগুলির সহিত ঈশ্বর নিজেও কোনরূপ বাধার সৃষ্টি করতে পারেন না। এটা একটি ভ্রান্ত বিজ্ঞান । প্রকৃতি তার স্রষ্টার দাস। ঈশ্বর তার নিয়ম-কানুন বাতিল করেন না। কিন্তু এগুলোকে তার অস্ত্র হিসাবে নিয়ত ব্যবহার করেন। প্রকৃতিতে পিতা ও তার পুত্রের কাজ অবিরতই চলছে । খ্রীষ্ট বলেছেন, PPBeng 69.4
“আমার পিতা এখন পৰ্য্যন্ত কাজ করিতেছেন, আমিও করিতেছি।” যোহন ৫:১৭ । PPBeng 69.5
এই পৃথিবীর ব্যাপারে ঈশ্বরের সৃষ্টির কাজ সমাপ্ত হয়েছে। “তাঁহার কর্ম জগতের পত্তনাবধি সমাপ্ত ছিল।” ইব্রীয় ৪:৩। কিন্তু তার সৃষ্ট জিনিসকে ধরে রাখতে তার শক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রত্যেক শ্বাস, হৃদয়ের প্রত্যেক স্পন্দন, তার সর্বব্যাপী যত্নের সাক্ষী, যার মধ্যে “আমাদের জীবন, গতি ও সত্ত্বা।” প্রেরিত ১৭:২৮। ঈশ্বরের হাত গ্রহগুলিকে পরিচালিত করে এবং যথাস্থানে কার্যকরী রাখে। “তিনি বাহিনীর ন্যায় সংখ্যানুসারে তাহাদিগকে বাহির করিয়া আনেন, সকলের নাম ধরিয়া তাহাদিগকে আহবান করেন; তাঁহার সামর্থ্যের আধিক্য ও শক্তির প্রাবল্য প্রযুক্ত তাহাদের একটাও অনুপস্থিত থাকে না,” যিশাইয় ৪০:২৬। তার শক্তিতেই উদ্ভিদ রাজি বৃদ্ধি পায়, পত্র পল্লবিত হয়, এবং ফুল ফোটে। তিনি “পর্ব্বতগণের উপরে তৃণ উপাদন করেন” (গীতসংহিতা ১৪৭৪৮), আর তাঁর দ্বারাই উপত্যকা ফলে পূর্ণ হয়। “বনপশু সকল...ঈশ্বরের কাছে তাহাদের খাদ্য অন্বেষণ করে” (গীতসংহিতা ১০৪:২০, ২১), এবং ক্ষুদ্র পতঙ্গ হতে মানুষ পর্যন্ত প্রত্যেক জীবন্ত প্রাণী তাঁর দেয়া ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল । PPBeng 69.6
সমস্ত সত্য বিজ্ঞান তার কাজের সাথে ঐক্য রাখে; প্রত্যেক খাঁটি শিক্ষা তার প্রশাসনের প্রতি বাধ্যতার দিকে পরিচালিত করে। বিজ্ঞান আমাদের দৃষ্টিতে নূতন নূতন আশ্চর্য জিনিস তুলে ধরে; নূতন গভীরতার সন্ধানে ইহা অনেক উচ্চে পৌঁছে; কিন্তু এর গবেষণা থেকে এমন কিছু বের করে না যা স্বর্গীয় প্রকাশের সহিত বৈষম্যমূলক হয়। প্রকৃতি পাঠ ও ঈশ্বরের লিখিত বাক্য একে অপরকে আলোকিত করে। PPBeng 70.1
মানুষ হয়ত চিরকালই অনুসন্ধান করবে। চিরকালই শিখতে থাকবে, তথাপি তার সামনে অপরিসীমতা থেকেই যাবে। সৃষ্টির কাজ ঈশ্বরের ক্ষমতা ও মহত্বের সাক্ষ্য দেয়। গীতসংহিতা ১৯৪১ দেখুন। যারা ঈশ্বরের লিখিত বাক্যকে তাদের পরামর্শদাতা হিসাবে গ্রহণ করে, তারা ঈশ্বরকে পরিচয় করার সহায়করূপে বিজ্ঞানের ব্যবহার করে থাকে । “ফলতঃ তাঁহার অদৃশ্য গুণ, অর্থা তাঁহার অনন্ত পরাক্রম ও ঈশ্বরত্ব, জগতের সৃষ্টিকাল অবধি তাঁহার বিবিধ কার্য্যে বোধগম্য হইয়া দৃষ্ট হইতেছে, এ জন্য তাহাদের উত্তর দিবার পথ নাই।” রোমীয় ১:২০ । PPBeng 70.2