Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents
মণ্ডলীর জন্য উপদেশ - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First

    আধ্যাত্মিক বিষয়ের জন্য রুচি মার্জ্জিত করা

    যুবকযুবতিগণের জন্য একমাত্র নিরাপত্তা — অবিরত জাগিয়া থাকা, ও বিনীতভাবে প্রার্থনা করা। এই সকল ব্যতীতও খ্রীষ্টীয়ান হওয়া যায়, - তাহারা যেন এই চাতুবাদে কখনই মুগ্ধ না হয়। পরীক্ষা ও কৌশলসমূহ দীপ্তির আবরণে আচ্ছাদিত করিয়া প্রান্তরে শয়তান যেরূপ খ্রীষ্টের সম্মুখে আসিয়াছিল, তেমনি সে আমাদের সম্মুখে উপস্থিত হয়। সে তখন স্বর্গীয় এক দূতের বেশে আসিয়াছিল। আমাদের আত্মার শত্রু, স্বর্গীয় অতিথির বেশে আমাদের নিকটে আসিবে, এহেতু আমাদের একমাত্র নিরাপত্তার নিমিত্ত প্রেরিত পৌল আমাদিগকে মিতাচারী হইতে ও জাগিয়া থাকিতে বলিয়াছেন। যে সকল যুবকযুবতী অসতর্ক ও চপল চিত্ত এবং যাঁহারা খ্রীষ্টীয় কর্ত্তব্যে অবহেলা করিয়া থাকে, তাহারা খ্রীষ্টের ন্যায় বিজয়ী না হইয়া, বরং শত্রুর প্রলোভনে ক্রমাগতই পতিত হইতেছে। 23T 374;CCh 462.4

    অনেকেই মুখে বলে যে, তাহারা প্রভুর দিকে আছে, কিন্তু কার্য্যতঃ তাহারা নাই ; তাহাদের সকল কার্য্যে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, তাহারা শয়তানের দলে। আমরা কাহার দলে, তাহা কি প্রকারে দেখাইব ? আমাদের অন্তঃকরণে কাহার অধিকার ? আমাদের চিন্তাসমূহ কাহাতে ?CCh 463.1

    আমরা কাহার বিষয় আলাপ করিতে ভালবাসি ? আমাদের প্রগাঢ় অনুরাগ এবং আমাদের সর্ব্বোতম শক্তি কাহাতে ? আমরা যদি সদাপ্রভুর দলে থাকি, তবে আমাদের চিন্তাসমূহ থাকে তাঁহাতে এবং আমাদের মধুরতম চিন্তাসমুহ থাকে তাহাঁরই সম্বন্ধে। জগতের সহিত আমাদের কোন মিত্রতা নাই ; আমরা আমাদিগকে ও আমাদের যাহা কিছু আছে, সে সকলই তাঁহার নিকটে উৎসর্গ করিয়াছি। আমরা তাঁহার প্রতিমূর্ত্তি ধারণ করিতে, তাঁহার আত্মা দেখাইতে, তাঁহার ইচ্ছা পালন করিতে ও সর্ব্ববিষয়ে তাঁহাকেই সুখী করিতে বাসনা করি।CCh 463.2

    উপকার-জনক ফল লাভার্থে আমাদের মনোবৃত্তিগুলি ব্যবহারের শক্তিকে প্রকৃত শিক্ষা কহে। জাগতিক লোকদের ধীশক্তি আছে, অস্থি ও পেশী-বল আছে, তথাপি তাহারা ধর্ম্ম সম্বন্ধে এত উদাসীন কেন ? ইহার প্রকৃত কারণ এই যে, আমাদের সত্তার সমস্ত শক্তি জগতের দিকে অবনমিত। বৈষয়িক ব্যাপারে লিপ্ত হইবার নিমিত্ত আমরা ব্যগ্রতা ও শক্তি সহকারে নিজেদিগকে শিক্ষা দিয়াছি, ইহাতে আমাদের মন সহজেই সেই দিকে নমিত হইয়াছে। আর এই জন্যই খ্রীষ্টীয়ানগণ ধর্ম্ম জীবন এত কঠোর ও বৈষয়িক জীবন এত সহজ বলিয়া মনে করেন। কারণ ঐ দিকেই শক্তি খাটাইবার জন্য তাঁহাদের মনোবৃত্তিগুলিকে শিক্ষা দেওয়া বা অভ্যস্ত করান হইয়াছে। ধর্ম্মজীবনে ঈশ্বরের বাক্যের সত্যগুলি স্বীকার করা হইয়াছে, কিন্তু জীবনে বাস্তব দৃষ্টান্ত দেখান হয় নাই।CCh 463.3

    ধর্ম্মসম্বন্ধীয় চিন্তারাশির ও মনোবৃত্তিগুলির অনুশীলন বা উন্নতি সাধনকে শিক্ষার একটী অঙ্গ করা হয় না। সমগ্র সত্তাকে বা সমগ্র জীবনকে প্রভাবান্বিত ও বশীতূত করাই ইহাদের কার্য্য হওয়া উচিত। ন্যায়সঙ্গত কার্য্য করিবার অভ্যাস হ্রাস পাইতেছে। অনুকূল প্রভাবের ফলে মনে হঠাৎ আবেগ উপস্থিত হয়, কিন্তু পবিত্র বিষয় সমূহ স্বাভাবিকরূপে ও তৎপর সহকারে চিন্তা করা মনের প্রধান নীতি নহে।CCh 464.1

    পবিত্রতা ভালবাসিতে মনকে কঠোর শিক্ষা দিতে হইবে ও নিয়মাধীন হইতে হইবে। আধ্যাত্মিক বিষয়ের প্রতি প্রেম দেখাইবার জন্য উৎসাহিত করিতে হইবে ; হাঁ, তুমি যদি অনুগ্রহে ও সত্যের জ্ঞানে বৃদ্ধি প্রাপ্ত হইতে চাহ, তবে তোমাকে অবশ্য অবশ্যই উৎসাহিত করিতে হইবে। যতদূর সম্ভব উত্তমতা ও প্রকৃত পবিত্রতার আকাঙক্ষা করা ঠিক্‌ ; কিন্তু দৃঢ়-সঙ্কল্প হইয়া কার্য্যে পরিণত না করিলে উহাতে কোনই লাভ হইবে না। খ্রীষ্টীয়ান হইবার আশা ও ইচ্ছা পোষণ করিয়া অনেকে বিনষ্ট হইবে ;কারণ তাহারা ব্যগ্রভাবে চেষ্টা করে না ; তাহারা তুলাতে পরিমিত হইয়া লঘুরূপে নির্ণীত হইবে ; ইচ্ছাকে ঠিক্‌ দিকে পরিচালিত করিতে হইবে। আমি ষোলোআনা খ্রীষ্টীয়ান হইব। আমি সিদ্ধ প্রেমের দৈর্ঘ্য, প্রস্থ, উচ্চতা ও গভীরতা জানিয়া লইব। যীশুর বাক্যগুলিতে মনোনিবেশ কর ঃ- “ধন্য যাঁহারা ধার্ম্মিকতার জন্য ক্ষুধিত ও তৃষিত কারণ তাহারা পরিতৃপ্ত হইবে।” মথি ৫:৬। যাঁহারা ধার্ম্মিকতার জন্য ক্ষুধিত ও তৃষিত, তাহাদিগকে পরিতৃপ্ত করণার্থে খ্রীষ্ট প্রচুর উপায় করিয়া রাখিয়াছেন। 32T 262-266;CCh 464.2

    উন্নততর আধ্যাত্মিক গুণরাজির চেষ্টা কর

    আত্মা যেন অসম্পূর্ণ ধার্ম্মিকতায় পরিতৃপ্ত না হয়, তজজন্য প্রেমের বিশুদ্ধ উপাদান আত্মাকে উন্নততর গুনের ও ঐশ্বরিক বিষয়ে বর্দ্ধিত-জ্ঞানের নিমিত্ত সম্প্রসারিত করিবে। এই জীবনের অকিঞ্চিৎকর ও ক্ষয়ণীয় দ্রব্য লাভের জন্য যেরূপ, ঐশ্বরিক বিষয়ে জ্ঞান লাভের জন্যও যদি তাহারা সেরূপ উচ্চাকাঙ্ক্ষী, উদ্দ্যোগী ও অধ্যবসায়ী হইত, তবে তাহারা যে আধ্যাত্মিক বল লাভ করিতে পারিত, খ্রীষ্টীয়ান নামে পরিচিত অনেকেরই তদ্বিষয়ে কোন জ্ঞান নাই। নামধারী খ্রীষ্টীয়ানের দল আধ্যাত্মিক খর্ব্বতায় পরিতৃপ্ত। প্রথমে ঈশ্বরের রাজ্য ও তাঁহার ধার্ম্মিকতার চেষ্টা করার কোন প্রবৃত্তিই তাহাদের নাই ; এই নিমিত্ত ঈশ্বর-পরায়ণতা তাহাদের নিকট একটী গুপ্ত-রহস্য। তাহারা ইহা বুঝিতে পারে না। পরীক্ষামূলক জ্ঞানের দ্বারা তাহারা খ্রীষ্টকে জানে না।CCh 465.1

    ঐশ্বরিক বিষয়ে খর্ব্ব ও পঙ্গু থাকিয়াও যে সকল নরনারী পরিতৃপ্ত, তাহারা হঠাৎ স্বর্গে প্রেরিত হউক এবং ক্ষণকালের জন্য সেইস্থানের চির উন্নত ও সিদ্ধতার পবিত্র অবস্থা নিরীক্ষণ করুক, প্রতিটী প্রাণীকে প্রেমে পূর্ণ ও প্রতিটী মুখমণ্ডল আনন্দে উদ্ভাসিত হইতে দেখুক ; ঈশ্বরের ও মেষশাবকের সম্মানার্থে মনোমুগ্ধকর সুমধুর বীণা-ধ্বনি উত্থিত হইতে শুনুক ; যিনি সিংহাসনে উপবিষ্ট তাঁহার সম্মুখ হইতে এবং মেষশাবকের সম্মুখ হইতে সাধুগণের উপরে অনন্ত জ্যোতিস্রোত প্রবাহিত হইতে দেখুক ; এবং তাহারা হৃদয়ঙ্গম করুক যে উপভোগ করিবার নিমিত্ত উচ্চতর ও মহত্তর আনন্দ আছে ; তাহারা ঈশ্বরের আনন্দ যত উপভোগ করিবে, চির আনন্দের উচ্চতর সীমায় উঠিবার ক্ষমতা তত বাড়িয়া যাইবে, আর এইরূপে গৌরবের অনন্ত প্রবাহ ও বর্ণনাতীত আশীর্ব্বাদ হইতে নূতন ও মহত্তর সম্ভার পাইতে থাকিবে- আমি জিজ্ঞাসা করি, এইরূপ লোকেরা কি স্বর্গীয় দলের সহিত মিশিতে, তাঁহাদের সঙ্গীতে যোগদান করিতে এবং ঈশ্বরের ও মেষশাবকের নিকট হইতে বিশুদ্ধ, উন্নত ও আত্মবিস্মৃতিজনক যে মহিমা নির্গত হয়, তাহা সহ্য করিতে পারে ? আহা, না ! তাহারা যেন স্বর্গীয় ভাষা শিখিতে এবং “অভিলাস-মূলক সংসারব্যাপী ক্ষয় (ভ্রষ্টতা) হইতে পলায়ন করিয়া, ঈশ্বরীয় স্বভাবের সহভাগী” হইতে পারে (২ পিতর ১:৪), তজজন্য পরিক্ষা-কাল বহু বৎসর বাড়াইয়া দেওয়া হইয়াছে। কিন্তু তাহাদের শারীরিক শক্তি ও মানসিক বল কার্য্যে নিয়োজিত করিতে তাহাদের নিজেদের এক সারথ-সম্বলিত বিষয় আছে। তাহারা সরলভাবে ঈশ্বরের সেবা করিতে ও ইহাকে তাহাদের বৃত্তি করিয়া তুলিতে পারে নাই। তাহাদের মনে জাগতিক অসমসাহসিক-কার্য্য প্রথমে স্থান পায় এবং তাহাদের শক্তির সারাংশ হরন করে, আর ক্ষণস্থায়ী এক চিন্তা ঈশ্বরে উৎসর্গীকৃত হয়। চরম সিদ্ধান্তের পরে এইরূপ লোকদের কি কোন পরিবর্ত্তন হইতে পারে ? “যে কলুষিত, সে ইহার পরেও কলুষিত হউক ; এবং .........যে পবিত্র, সে ইহার পরেও পবিত্রীকৃত হউক ;” এইরূপ সময় আসিতেছে।CCh 465.2

    যাহার আধ্যাত্মিক কার্য্যে আপন আপন মনকে উল্লাসিত হইতে শিক্ষা দিয়াছে, তাহারা রূপান্তরিত হইতে পারিবে এবং তাহারা স্বর্গীয় পবিত্রতায় ও অলৌকিক মহিমায় অভিভূত হইবে না। কলাবিদ্যায় তোমার অসামান্য জ্ঞান থাকিতে পারে, তুমি বিজ্ঞানবিদ্ হইতে পার, গান-বাদ্যে ও লিপি-পদ্ধতিতে তোমার তুল্য কেহ নাও হইতে পারে, তোমার আচার-ব্যবহার তোমার সঙ্গিগণকে মুগ্ধ করিতে পারে, কিন্তু স্বর্গের জন্য প্রস্তুত হওনার্থে সি সকল জিনিষে কী করিতে পারে ? ঈশ্বরের বিচারাসনের সম্মুখে দাঁড়াইবার জন্য এই সকল জিনিষে কী করিতে পারে ? 42T 266, 267;CCh 466.1