Go to full page →

ঈশ্বর সম্বন্ধে ধারণা মানুষের ব্যবহারের পরিবর্তন ঘটায় PPBeng 214

অনেক পৌত্তলিক জাতি দাবি করে যে তাদের মূর্তিগুলি প্রতীকস্বরূপ যার মাধ্যমে তারা আসল ঈশ্বরের আরাধনা করে । কিন্তু ঐ ধরণের আরাধনাকে ঈশ্বর পাপরূপে আখ্যায়িত করেছেন । অনন্ত ও অসীমকে বস্তুতে পরিণত করলে ঈশ্বর সম্পর্কে মানুষের ধারণা নীচু স্তরে চলে যায় । তখন মন স্রষ্টার প্রতি ধাবিত না হয়ে সৃষ্টির প্রতি ধাবিত হয় । আর যখন ঈশ্বর সম্পর্কে ধারণা নিম্ন পর্যায়ের হয় তখন মানুষ নিজেও নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছে যায় । PPBeng 214.2

“কেননা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমি স্বগৌরব রক্ষণে উদ্‌যোগী ঈশ্বর।” ঈশ্বরের সহিত মানুষের গভীর সম্পর্কের প্রতীক হল বিবাহ। আর পৌত্তলিকতা হল আত্মিক ব্যভিচার যা ঈশ্বর ঘৃণা করেন । PPBeng 214.3

“আমি পিতৃগণের অপরাধের প্রতিফল সন্তানদিগের উপরে বর্তাই, যাহারা আমাকে দ্বেষ করে, তাহাদের তৃতীয় চতুর্থ পুরুষ পর্য্যন্ত বর্তাই।” মাতা পিতার পাপের জন্য সন্তানদের শাস্তি দেয়া হয় না, কিন্তু যখন তারা মাতা পিতার পাপের অংশ হয় তখন শাস্তি দেয়া হয় । কিন্তু সাধারণতঃ দেখা যায় যে উত্তরাধীকার ও দৃষ্টান্ত দ্বারা ছেলে পিতার পাপের অংশীদার হয়ে যায়! অন্যায় প্রবণতা, বিকৃত স্পৃহা, অবক্ষয় প্রাপ্ত নৈতিকতা, এবং দৈহ্যিক রোগ ও অধঃপতন পিতা হতে ছেলে উত্তরাধীকারসূত্রে লাভ করে থাকে; তৃতীয় ও চুতর্থ বংশধর পর্যন্ত ইহা বিস্তারিত হয়। PPBeng 214.4

“কিন্তু যাহারা আমাকে প্রেম করে ও আমার আজ্ঞা সকল পালন করে, আমি তাহাদের সহস্র পুরুষ পর্য্যন্ত দয়া করি।” যারা তাঁর সেবায় বিশ্বস্ত থাকে, তাদের প্রতি দয়া প্রতিজ্ঞা করা হচ্ছে, যারা তাকে ঘৃণা করে, তাদের মত তৃতীয় বা চতুর্থ বংশধর পর্য্যন্ত নয়, কিন্তু হাজার হাজার পুরুষ পর্য্যন্ত। PPBeng 214.5

“তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক লইও না, কেননা যে কেহ তাঁহার নাম অনর্থক লয়, সদাপ্রভু তাহাকে নির্দোষ করিবেন না।” এই আজ্ঞা আমাদের ঈশ্বরের নাম অযথা বা ইচ্ছাখুসিভাবে মুখে আনতে মানা করেছে। সাধারণ আলোচনায় ইচ্ছাখুসিভাবে ঈশ্বরের নাম উচ্চারণ করে, অথবা বিনা চিন্তায় ঘন ঘন তাঁর নাম মুখে এনে, আমরা তাঁর অবমাননা করে থাকি । “তাহার নাম পবিত্র ও ভয়াবহ।” গীতসংহিতা ১১১:৯। এই নাম সশ্রদ্ধা ও গুরুত্বের সহিত উচ্চারণ করতে হবে। PPBeng 214.6

“তুমি বিশ্রামদিন স্মরণ করিয়া পবিত্র করিও। ছয় দিন শ্রম করিও, আপনার সমস্ত কাজ করিও; কিন্ত সপ্তম দিন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বিশ্রামদিন; সে দিন তুমি কি তোমার পুত্র কি কন্যা, কি তোমার দাস দাসী, কি তোমার পশু, কি তোমার পুরদ্বারের মধ্যবর্তী বিদেশী, কেহ কোন কাৰ্য্য করিও না; কেননা সদাপ্রভু আকাশমন্ডল ও পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সকলের মধ্যবর্তী সমস্ত বস্তু ছয় দিনে নির্মাণ করিয়া সপ্তম দিনে বিশ্রাম করিলেন, ও পবিত্র করিলেন।” একটি নূতন প্রতিষ্ঠানরূপে শাব্বাথকে স্থাপন করা হচ্ছে না বরং সৃষ্টির মুহূর্ত হতেই এর উৎপত্তি। ঈশ্বরকে স্বর্গ ও ভূ-মন্ডলের স্রষ্টারূপে নির্দ্দেশপূর্বক, এটি মিথ্যা দেবতা হতে সত্য ঈশ্বরের পার্থক্য প্রদর্শন করে। এরূপে বিশ্রামদিন ঈশ্বরের প্রতি মানুষের বিশ্বস্ততার নিদর্শন। চতুর্থ আজ্ঞাটি হল দশটি আজ্ঞাসমূহের একটি যেখানে আজ্ঞাদাতার নাম ও উপাধি উভয়ই পাওয়া যায়। ইহাই একমাত্র আজ্ঞা যেখানে যে আদেশ দেয়া হচ্ছে তার কর্তৃত্ত্বের উৎসের সন্ধান পাওয়া যায়। এইভাবে এটি ঈশ্বরের সীলমোহর বহন করে। PPBeng 215.1

ঈশ্বর মানুষকে কাজের জন্য ছয় দিন দিয়েছেন এবং তিনি চান যে ঐ ছয় দিনের তার নিজের কাজ করা হয়। অত্যন্ত প্রয়োজনীয় কাজ ও দয়ার কাজ বিশ্রামদিনে করা যাবে। রোগী ও কষ্ট ভোগরত ব্যক্তিদের সব সময় যত্ন নেয়া প্রয়োজন; কিন্তু অপ্রোয়জনীয় কাজ সর্বদাই বন্ধ রাখতে হবে। বিশ্রামদিনকে পবিত্র রাখার জন্য আমরা আমাদের মনকেও পৃথিবীর চিন্তা হতে দূরে রাখব। আর এই আজ্ঞায় যারা আমাদের “দরজার” ভিতর তাদের সকলকেই ধরা হয় । পবিত্র মুহূর্তে গৃহবাসী সকলেই তাদের কাজকর্ম বন্ধ করবে। তাঁর পবিত্র দিনের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে সকলকেই তাঁর সেবার জন্য একত্রিত হতে হবে । PPBeng 215.2

তোমার পিতাকে ও তোমার মাতাকে সমাদর করিও, যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিবেন, সেই দেশে তোমার দীর্ঘ পরমায়ু হয়।” PPBeng 215.3

পিতামাতা এমন এক সম্মান ও প্রেমের ভাগী যা অন্য কেউই পেতে পারে না। যে আপন মাতাপিতার কর্তৃত্ব অস্বীকার করে সে ঈশ্বরের কর্তৃত্বকে অস্বীকার করছে । পঞ্চম আজ্ঞা সন্তানদের নিকট হতে মাতাপিতার প্রতি শুধু সম্মান, নতি স্বীকার ও বাধ্যতাই কামনা করে না, বরং পিতামাতাকে প্রেম ও যত্ন করতে, তাদের দুর্ভাবনা লাঘব করতে, তাদের সম্মান রক্ষা করতে, আরও বৃদ্ধ বয়সে তাদের দেখাশুনা ও যত্ন করতে নির্দ্দেশ দেয় । আর ইহা নেতৃবৃন্দের ও অন্যান্য প্রাচীনদের সম্মান প্রদর্শন করতে নিৰ্দ্দেশ দেয় । PPBeng 215.4