Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    ১২ - শাস্ত্র একটি রক্ষাকবচ

    “ব্যবস্থার কাছে ও সাক্ষ্যের কাছে [অন্বেষণ কর]; ইহার অনুরূপ কথা যদি তাহারা না বলে, তবে তাহাদের পক্ষে অরুনােদয় নাই।” যিশা ৮:২০। ভ্রান্ত শিক্ষাগুরুদের প্রভাব ও অদকার আত্মাদের মােহময় শক্তির বিরুদ্ধে রক্ষাকবচ হিসেবে শাস্ত্রকে মান্য করতে ঈশ্বরের লােকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। বাইবেল হত জ্ঞান আহরণ করা হতে মানুষকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য শয়তান সম্ভাব্য সবধরণের কৌশল প্রয়ােগ করে; কারণ এর সরল বাক্যগুলাে তাঁর চাতুরী সকল প্রকাশ করবে । ঈশ্বরের প্রতিটি পুনরুজ্জীবনী কাজে মন্দতার অধিপতিকে তাঁর কাজে আর মনােযােগী হতে জাগরিত করে সে এখন খ্রীষ্ট ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে চরম সংগ্রামের জন্য সে তাঁর সবধরণের প্রচেষ্টা কার্যকর করছে। শেষ মহা প্রবঞ্চনাটি শীঘ্রই আমাদের সামনে প্রকাশিত হবে। খ্রীষ্টারী আমাদের সামনে তাঁর আশ্চর্য কাজগুলাে করবে। তাঁর নকল কাজগুলাে আসলের এত কাছাকাছি হবে যে পবিত্র শাস্ত্র ছাড়া পার্থক্য নির্ণয় করা কঠিন হবে। তাদের প্রতিটি বাক্য ও প্রতিটি অলৌকিক কাজ সাক্ষ্যের কাছে পরখ করতে হবে ।GrHBen 157.1

    ঈশ্বরের সবকয়টি ব্যবস্থা মান্যকারীদের বিরুদ্ধাচারণ ও উপহাস করা হবে। তারা কেবল ঈশ্বরে স্থির থাকতে সক্ষম হবে। তাদের সামনের পরীক্ষা সহ্য করতে হলে, ঈশ্বরের প্রকাশিত বাক্যে তাঁর ইচ্ছা বুঝতে হবে; কেবল তাঁর চরিত্র, শাসন, ও উদ্দেশ্য সম্পর্ক সঠিক ধারণা থাকলেই তারা সে অনুসারে কাজ করবে ও তাঁকে সম্মান করবে। যারা বাইবেলের সত্য দ্বারা মন সুরক্ষিত করেছেন তারা ছাড়া কেউই শেষ মহা সংঘর্ষের মধ্যে টিকে থাককে পারবে না। প্রত্যেক আত্মার কাছে এই অনুসন্ধানমূলক পরীক্ষা আসবে আমি কি মানুষের চেয়ে ঈশ্বরের বাধ্য থাকব? সিদ্ধান্ত নেবার সময় এখনই উপস্থিত। আমাদের পাদযুগল কি ঈশ্বরের অপরিবর্তনীয় পাথরের ওপর সংস্থাপিত হয়েছে? আমরা কি ঈশ্বরের আজ্ঞা ও যীশুর বিশ্বাসের সমর্থনে দৃঢ়সংকল্প নিয়ে দাড়াতে প্রস্তুত?GrHBen 157.2

    ক্রুশারােপণের আগে ত্রাণকর্তা তাঁর শিষ্যদের ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন যে তাকে মেরে ফেলা হবে এবং কবর থেকে তিনি আবার ওঠবেন, আর এই বিষয়ে তাদের মনে ও প্রাণে ছাপ ফেলার জন্য স্বর্গদূতগণ ছিলেন কিন্তু শিষ্যগণ রােমীয় শাসনেয় শৃঙ্খল থেকে তাদের পার্থিব মুক্তির প্রত্যাশা করছিলেন, তাদের আশা যাকে নিয়ে কেন্দ্রীভূত ছিল তাঁর এমন অপমান জনক মৃত্যু ভােগ করবেন সেটা তারা সহ্য করতে পারেন। নি । যে বাক্যগুলাে তাদের স্মরণে রাখার প্রয়ােজন ছিল তা তাদের মন থেকে মুছে গেল; এবং পরীক্ষা যখন এলাে তখন তাদেরকে অপ্রস্তুত দেখতে পাওয়া গেল। যীশুর মৃত্যু তাদের প্রত্যাশাকে এমন ভাবে চূর্ণ করে দিল যেন তিনি পূর্ব হতে তাদের সতর্ক করেননি । যীশুর বাক্য যেমন তাঁর শিষ্যদের কাছে উন্মুক্ত ছিল তদ্রুপ ভবিষ্যদ্বাণীতে ভবিষ্যত আমাদের কাছে উমুক্ত আছে। অনুগ্রহের সময়কালের সাথে যুক্ত ঘটনাবলী এবং সঙ্কটকালের জন্য প্রস্তুতি কার্যগুলাে স্পষ্টভাবে দেখানাে হয়েছে । কিন্তু এইগুলাে যদি কখনও প্রকাশিত না হতাে তবে কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ সত্যের বিষয়ে জনতার কোন জ্ঞান থাকতাে না, প্রতিটি ছাপ যা তাদের পরিত্রাণ পর্যন্ত জ্ঞানী করবে তা তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেবার জন্য শয়তান সতর্ক থাকে এবং সঙ্কটের সময়ে তাদেরকে অপ্রস্তুত দেখতে পাওয়া যাবে ।GrHBen 158.1

    ঈশ্বর যখন মানুয়ের কাছে সতর্ক বার্তা পাঠান, তা এমন গুরুত্বপূর্ণ যে সেটা আকাশের মধ্যপথে উড়ন্ত স্বর্গদূতদের মাধ্যমে ঘােষণা করেন, ঈশ্বর চান যেন বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন লােকসকল সে বাণীতে মনােযােগ প্রদান করে । পশু ও তাঁর প্রতিমূর্তি ভজনা করার বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযােগ ও দণ্ডাজ্ঞা উত্থাপন করা হয়েছে (প্রকাশিত বাক্য ১৪:৯-১১), সবাইকে পশুর ছাব কি তা জানতে এবং তা গ্রহণ করা থেকে কিভাবে বিরত থাকা সম্ভব তা জানতে তাদের ভবিষদ্বাণী অধ্যয়ন করার জন্য পরিচালিত করে। কিন্তু বহুসংখ্যক লােকই সত্য শ্রবণ করা থেকে তাদের কান ফিরায় এবং মনগড়া গল্পে মনােযােগী হয়। প্রেরিত পৌল, শেষকালের দিকে তাকিয়ে ঘােষণা করেছেন: “কেননা এমন সময় আসিবে, যে সময় লােকেরা নিরাময় শিক্ষা সহ্য করিবে না।” ২ তীমথিয় ৪:৩। সে সময় এখনই উপস্থিত। জনগণ বাইবেলের সত্য চায় না, কারণ সেটা পাপপূর্ণ ও সংসারপ্রেমী হৃদয় এবং বাসনা সকলে হস্ত ক্ষেপ করে; এবং শয়তান তাদের পছন্দ মত প্রতারণা সকল যােগান দেয়।GrHBen 158.2

    কিন্তু পৃথিবীতে ঈশ্বরের একদল লােক থাকবেন বাইবেলকে, এবং শুধুমাত্র বাইবেলকেই, তাদের সমস্ত ধর্ম বিশ্বাসের মানদণ্ড এবং সর্বপ্রকার সংস্কারের ভিত্তি হিসেবে মর্যাদা দেবেন। বিদ্বান লােকদের মতবাদ, বিজ্ঞানের অনুমান বা সিদ্ধান্ত সকল, যা তাদের প্রতিনিধিত্বকারী অসংখ্য মণ্ডলীর যত সংখ্যাবহুল, সংখ্যাগরিষ্ঠের মত তাদের একটিকেও অথবা সবকটিকে ধর্মীয় বিশ্বাসের পক্ষে অথবা বিপক্ষ হিসেবে গণ্য করা উচিত হবে না কোন ধর্মীয় শিক্ষা অথবা ধর্মমত গ্রহণ করার পূর্বে তাঁর প্রতি “সদাপ্রভু এই রূপ কহেন” এর স্পষ্ট সমর্থন দাবি করা উচিত ।GrHBen 159.1

    ঈশ্বরের স্থানে শয়তান অবিরত মানুষের মনােযােগ আকর্ষণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে । সে শাস্ত্র অনুসন্ধান করে তাদের কর্তব্য জেনে নেয়ার পরিবর্তে লােকদের নিজে নিজে বিশপদের, পুরােহিতদের, ধর্মতত্ত্বর অধ্যাপকদের কাছে যেতে ও তাদের পথপ্রদর্শক রূপে দেখার জন্য পরিচালিত করে। তখন, এইসব নেতাদের মন নিয়ন্ত্রণ করে, সে এই জনসাধারণদের তাঁর ইচ্ছানুসারে প্রভাবিত করতে পারে ।GrHBen 159.2

    খ্রীষ্ট যখন জীবনের বাক্য বলতে এসেছিলেন, সাধারণ লােকজন তাঁর কথা আনন্দের সঙ্গে শুনেছিল; অনেক লােক, এমনকি যাজকগণ ও শাসকগণ, তাতে বিশ্বাস করেছিলেন। কিন্তু প্রধান যাজক এবং জাতির নেতৃস্থানীয় লােকেরা তাঁর শিক্ষামালা নিন্দা ও বর্জন করতে বদ্ধপরিকর ছিলেন। যদিও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযােগ খুঁজে পেতে তারা ব্যর্থ হয়েছিলেন, যদিও তারা তাঁর মতে স্বর্গীয় শক্তির প্রভাব অনুভব ও মুখে জ্ঞানের বাক্য ছাড়া কিছুই পায়নি, তথাপি তারা আপনাদেরকে কুসংস্কারযুক্ত বিদ্বেষে আবদ্ধ করেন; তারা তাঁর মশীহত্বের স্পষ্ট প্রমাণ অস্বীকার করেন, পাছে তাদের তাঁর শিষ্য হতে বাধ্য হয় । যীশুর এই প্রতিপক্ষরা ছিলেন তারা, যাদেরকে লােকে তাদের শৈশবকাল হতে শ্রদ্ধা করতে শিখেছিল, যাদের কর্তৃত্বের কাছে তারা নত হতে অভ্যস্ত ছিল । “ইহা কেমন হল”, তারা প্রশ্ন করল, “যে আমাদের শাসকগণ ও উচ্চশিক্ষিত ব্যবস্থাপকগণ যীশুতে বিশ্বাস করেন না ? তিনি যদি খ্রীষ্ট হতেন, এইসব আচারনিষ্ঠ ধার্মিক ব্যক্তিরা কি তাঁকে গ্রহণ করতেন না?” এটি ছিল এ ধরণের শিক্ষকদের প্রভাব যা যিহুদী জাতির ত্রানকর্তাকে প্রত্যাখ্যান করতে পরিচালিত করেছিল।GrHBen 159.3

    যে মনােভাব ঐসব পুরােহিত ও শাসকদেরকে প্রণােদিত করেছে। তা এখনাে এমন অনেকের দ্বারা প্রদর্শিত হয় যারা ঈশ্বর ভক্তির মহৎ ধর্মবিশ্বাস দেখায়। তারা বর্তমান কালের জন্য বিশেষ সত্য শাস্ত্রের সাক্ষ্যের কাছে পরীক্ষা করতে অস্বীকার করে। তারা তাদের নিজস্ব সংখ্যার, সম্পদ, এবং জনপ্রিয়তার দিকে নির্দেশ করে কিন্তু সত্যের প্রবক্তাদের অল্প সংখ্যক, দরিদ্র, অখ্যাত, এবং তাদের বিশ্বাস তাদেরকে পৃথিবী থেকে আলাদা করে বলে আখ্যা দিয়ে থাকে এবং তাদের প্রতি ঘৃণার চোখে তাকায় ।GrHBen 159.4

    খ্রীষ্ট আগাম দেখতে পান যে অযৌক্তিক ভাবে ক্ষমতা দখলকারী ব্যবস্থাবেত্তা ও ফরীশীগণ যিহুদীগণকে বিভাবে বিক্ষিপ্ত করে ক্ষান্ত হবে না । বিবেকবুদ্ধিকে শাসন করুনার্থে মানবিক কর্তৃত্বকে উন্নত করার কাজ, যা সর্বযুগে মণ্ডলীর জন্য এক চরম অভিশাপ হয়ে এসেছে সে বিষয়ে তাঁর ভাববাদীতুল্য ধারণা ছিল । ব্যবস্থাবেত্তা ও ফরীশীদের প্রতি তাঁর ভয়ানক নিন্দা, এই অন্ধ নেতাদের অনুসরণ না করার জন্য লােকদের প্রতি সতর্কবাণী, ভাবী প্রজন্মের জন্য এক পরামর্শ ও উপদেশ রূপে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।GrHBen 160.1

    রােমান ধর্মসম্প্রদায় শাস্ত্র ব্যাখ্যা করার অধিকার যাজকীয় গােষ্ঠীর কাছে সংরক্ষিত রেখেছে। কেবলমাত্র যাজকীয় সমপ্রদায়ই ঈশ্বরের বাত্য ব্যাখ্যা করার যােগ্যতা রাখে, এই ভিত্তিতে সাধারণ লােকদের কাছ থেকে শাস্ত্র গােপন রাখা হয়েছে। যদিও ধর্ম সংস্কার সবার কাছে বাইবেল এনে দিয়েছে, তথাপি রােমীয় সম্প্রদায়ের চালিয়ে যাওয়া সেই একই নীতি প্রটেষ্ট্যান্ট মণ্ডলীর অনেককেই তাদের নিজেদের বাইবেল অনুসন্ধান করা থেকে বিরত রেখেছে। মণ্ডলীর ব্যাখ্যানুসারে শিক্ষামালা গ্রহণ করতে তাদেরকে শিক্ষা দেয়া হয়েছে; এবং হাজার হাজার লােক ছিল, যা তাদের ধর্মমতের অথবা প্রতিষ্ঠিত শিক্ষার বিরুদ্ধে স্পষ্টভাবে ব্যক্ত হওয়া সত্বেও তা গ্রহণ করতে সাহস করে না।GrHBen 160.2

    ভ্রান্ত শিক্ষাগুরুদের বিরুদ্ধে বাইবেলে ভুরি ভুরি সতর্কবাণী থাকা সত্ত্বেও অনেকেই তাদের আত্ম যাজকদের কাছেই অর্পণ করতে প্রস্তুত । বর্তমানে হাজার হাজার ধর্মাধ্যাপকগণ রয়েছেন যারা বিশ্বাস সম্পর্কে তাদের নেতাদের দেয়া নির্দেশ ব্যতিরেকে কোন কারণ দেখাতে পারেন না । ত্রাণকর্তার শিক্ষামালা তারা প্রায় অলক্ষিত ভাবে উপেক্ষা করে, এবং বিশিষ্ট পুরােহিতদের বাক্যে নিঃসন্দেহে আস্থা স্থাপন করে। কিন্তু পুরােহিতগণ কি অভ্রান্ত? ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা যতক্ষণ না আমরা জানতে পারি যে তারা প্রকৃত আলাে-বাহক, ততক্ষণ পর্যন্ত কিভাবে আমরা আমাদের আত্মাগণকে তাদের পরিচালনায় দিতে পারি? অনেকেই নৈতিক সাহাসের অভাবে পৃথিবীর প্রচলিত ধর্ম-কর্ম থেকে সরে আসতে না পেরে জ্ঞানী লােকদের পদাঙ্ক অনুসরণ করে; এবং তারা নিজেরা অনিচ্ছার কারণে শাস্ত্র অনুসন্ধান করে না বিধায় তারা আশাহীনভাবে শৃঙ্খলে আবদ্ধ হয়ে পড়ছে। তারা অনুভব করতে পারে যে এ সময়ােপযােগী সত্য বাইবেলে স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান যে, ঘােষণার মাধ্যমে পবিত্র আত্মা তাঁর কার্য যত্নের সাথে সাধন করেন; তথাপি তারা দীপ্তি থেকে তাদের ফেরাতে পুরােহিতদের বিপক্ষকে অনুমতি দেয়। যদিও যুক্তি ও বিবেক মেনে নেয়, এই প্রতারিত আত্মগণ পুরােহিতদের থেকে আলাদাভাবে চিন্তা করতে পারে না; এবং তাদের ব্যক্তিগত বিচারবুন্ধি, তাদের চিরন্তর স্বার্থ অপরের অবিশ্বাস, অহংঙ্কার ও বিদ্বেষের কাছে বলি হয়।GrHBen 160.3

    তার বন্দিদের শৃঙ্খলাবদ্ব করতে শয়তান অনেক উপায়ে মানুষের প্রভাব দ্বারা কাজ করে থাকে । জনসাধারণকে নিজের দিকে আটক করতে যারা খ্রীষ্টের ক্রুশের শত্রু তাদের স্নেহ অনুরাগের রেশমী সুতােয় সংযুক্ত করে । মাতা-পিতা, সন্তান সংক্রান্ত, দাম্পত্য, অথবা সামাজিক, সেই আশক্তি যাই হােক না কেন, ফল একই; সত্যের বিপক্ষরা বিবেক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য তাদের শক্তি প্রয়ােগ করে, আর তাদের প্রভাবের অধীন ব্যক্তিদের যথেষ্ট সাহস ও স্বাধীনতা যাদের নেই তারা আপনাদের দায়িত্বর বিশ্বাস ও মান্যতা পালন করে।GrHBen 161.1

    সত্য ও ঈশ্বরের মহিমা অভিন্ন; এটি আমাদের কাছে অসম্ভব যে, আমাদের নাগালের মধ্যে বাইবেল থাকতে, ভ্রান্তি মতাদর্শে ঈশ্বরকে শ্রদ্ধাভক্তি করা অসম্ভব। অনেকে দাবী করে থাকেন যে একজন যা বিশ্বাস করে এতে কিছু যায় আসে না, যদি তাঁর জীবন ঠিক থাকে। কিন্ত জীবন বিশ্বাস দ্বারা ঢালাই করা। যদি দীপ্তি ও সত্য আমাদের নাগালের মধ্যে থাকে, আর আমরা তা শােনার ও দেখার সুযােগের অবহেলা করি, আমরা কার্যতঃ তা অস্বীকার করি; দীপ্তির বদলে আমরা অন্ধকারকে মনােনয় করি ।GrHBen 161.2

    “একটি পথ আছে, যাহা মানুষের দৃষ্টিতে সরল, কিন্তু তাহার পরিণাম মৃত্যুর পথ।” হিতােপদেশ ১৬:২৫। যেখানে ঈশ্বরের ইচ্ছা জানার জন্য সব ধরণের সুযােগ রয়েছে, সেখানে ভুল অথবা পাপের জন্য অজ্ঞতা কোন অজুহাত নয়। একজন লােক ভ্রমণ করছে এবং সে এমন একস্থানে এলাে যেখানে কয়েকটি পথ মিলত হয়েছে ও কোন পথ কোথায় যাবে তাঁর নির্দেশিকা বাের্ডে টাঙানাে আছে। সে যদি নির্দেশিকা বাের্ড অবহেলা করে, এবং সঠিক পথ মনে করে যে কোন পথ বেছে নেয়, সে হয়তাে খুব সতর্ক, কিন্ত সব কিছুর পরেও সে নিজেকে ভুল পথে আবিষ্কার করবে।GrHBen 161.3

    ঈশ্বর আমাদেরকে তাঁর বাক্য দিয়েছেন আমরা যেন এর শিক্ষাগুলাের সাথে পরিচিত হই এবং তিনি আমাদের কাছে কি দাবী করেছেন তা আমরা নিজেরাই জানতে পারি । এই প্রশ্ন নিয়ে ব্যবস্থাবেত্তা যখন যীশুর কাছে এসেছিলেন, “অনন্ত জীবন পাইতে হইলে আমাকে কি করিতে হইবে?” ত্রাণকর্তা তাকে শাস্ত্রের দিকে নির্দেশ করেন, বলেন, “ব্যবস্থায় কি লেখা আছে? তুমি কিরূপ পাঠ করিতেছ?” যুবা কি বৃদ্ধ, অজ্ঞতার জন্য কেউই রেহাই পাবে না; ঈশ্বরের ব্যবস্থা লনজনিত কারণের জন্য যােগ্য শাস্তি থেকে মুক্তি দেবে না; কারণ সেই ব্যবস্থার সঠিক উপস্থাপন এবং তাঁর নীতিসমূহ ও তাঁর দাবী-দাওয়া তাদের হাতে রয়েছে। সদিচ্ছা থাকায় যথেষ্ট নয়; একজন ব্যক্তি যা মনে করে অথবা একজন পুরােহিত যা সঠিক বলে তা করাই যথেষ্ট নয়। তাঁর আত্মার পরিত্রাণ ঝুঁকিপূর্ণ, তাঁর নিজেরই শাস্ত্র অনুসন্ধান করা উচিত। তাঁর বিশ্বাস যতই দৃঢ় হােক না কেন, পুরােহিত সত্য জানে বলে তাঁর বিশ্বাস যতই দৃঢ় হােক না কেন, এটি তাঁর বিশ্বাসের ভিত্তি নয়। সূর্গাভিমুখী যাত্রায় তাঁর কাছে প্রতিটি পথ নির্দেশের একটি তালিকা রয়েছে, কোন কিছুতে অনুমান করা তাঁর ঠিক হবে না।GrHBen 162.1

    প্রত্যেক বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন ব্যক্তির প্রথম ও সব্বোর্চ কর্তব্য হ.bই সত্য কি তা শাস্ত্র থেকে জানা, আর তারপর সত্যের জ্ঞানলােকে চলা এবং অপরকে তাঁর দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে উৎসাহিত করা। প্রত্যক চিন্তাধারার বিবেচনা করে ও শাস্ত্রের সাথে শাস্ত্র তুলনা করে আমাদের দিনের পর দিন অধ্যবসায়ের সাথে শাস্ত্র অধ্যয়ন করা উচিত। ঐশ্বরিক সাহায্যে আমাদেরকেই আমাদের জন্য অভিমত গঠন করতে হবে কারণ আমাদের জন্য ঈশ্বরের সম্মুখে জবাবদিহি করতে হবে ।GrHBen 162.2

    বাইবেলে অতি স্পষ্টভাবে প্রকাশিত সত্যগুলাে বিদ্বান লােকদের দ্বারা সন্দেহ ও অন্ধকার বিজড়িত করেছে, যারা মহাজ্ঞানীর ছল করে, এই শিক্ষা দেয় যে বাইবেলে ব্যবহৃত ভাষায় শাস্ত্র দুর্বোধ্য রহস্যময়, এই লেখ্য ভাষায় আধ্যাত্মিক অর্থ দৃশ্যমান নয়। এই লােকেরা ভ্রান্ত শিক্ষক। এরা যীশুর কথা অনুসারে এই শ্রেণীর লােক: “তােমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম।” মার্ক ১২:২৪। প্রতীক অথবা নির্দেশনা না হলে,GrHBen 162.3

    বাইবেলের ভাষায় তাঁর সুস্পষ্ট অর্থ অনুসারেই ব্যাখ্যা করা উচিত। খ্রীষ্ট প্রতিজ্ঞা করেছেন, “যদি কেই তাঁহার ইচ্ছা পালন করিতে ইচ্ছা করে, সে এই উপদেশের বিষয়ে জানিতে পারিবে ।” যােহন ৭:১৭। বাইবেলে যেরূপ লেখা আছে মানুষ যদি তাই গ্রহণ করে, তাদেরকে বিপদগামী এবং তাদের মনকে বিভ্রান্ত করবার জন্য যদি কোন ভণ্ড শিক্ষক না থাকত, তবে এমন কার্য সাধিত হতাে যা স্বর্গদূতগণকে আনন্দিত করে এবং যারা এখন ভ্রান্ত পথে রয়েছে হাজার হাজার লােক খ্রীষ্টে দলে চলে আসত।GrHBen 163.1

    আমাদের মনের সমস্ত শক্তি দিয়ে শাস্ত্র পাঠ করতে হবে এবং ঈশ্বরের গৃঢ়সহস্য গুলি জানতে যতদুর সম্ভব নশ্বরের সাধ্যানুযায়ী, বােধ শক্তিকে কাজে লাগাতে হবে; তথাপি আমাদের ভুললে চলবে না যে একটি শিশুর বাধ্যতা ও আনুগত্যতাই শিক্ষার্থীর প্রকৃত মনােভাব। দার্শনিক সমস্যাবলীর ওপর দক্ষতা লাভের জন্য যে পদ্ধতি প্রয়ােগ করে কখনাে একই উপায়ে শাস্ত্রীয় জটিলতা আয়ত্বে আনা যায় না। যে আত্মপ্রত্যয় নিয়ে অনেকে বৈজ্ঞানিক কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করে, সেই একইভাবে আমাদের বাইবেল অধ্যায়ন করা উচিত না, কিন্তু প্রার্থনা সহকারে ঈশ্বরের ওপর নির্ভর করে এবং তাঁর ইচ্ছা জানার জন্য আন্তরিকভাবে বাসনা নিয়ে আমাদের অধ্যয়ন করা উচিত। মহান ‘আমি আছি’ এর কাছে জ্ঞান আহরণের জন্য আমাদের নম্র ও শিক্ষণীয় মনােভাব নিয়ে আসতে হবে । অন্যথায় মন্দ দূতরা এমনভাবে আমাদের মনকে অন্ধ ও আমাদের হৃদয়কে কঠিন করবে যে সত্যের দ্বারা আমরা প্রভাবিত হবাে না ।GrHBen 163.2

    পণ্ডিত ব্যক্তিগণ শাস্ত্রের যে বহু অংশ রহস্যপূর্ণ বলে প্রচার করেন অথবা গুরুত্বপূর্ণ না বলে উপেক্ষা করেন তা খ্রীষ্টের বিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রাপ্ত ব্যক্তির কাছে সান্ত্বনা ও শিক্ষায় পূর্ণ। খ্রীষ্টের বাক্য সম্বন্ধে অনেক ধর্মতত্ত্ববিদদের জ্ঞান না থাকার কারণ হল যে, তারা যে সব ব্যবহারিক জীবনে লাভ করতে অনিচ্ছুক তাঁর প্রতি তাদের আগ্রহ নেই। বাইবেলের সত্য সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ, সত্য অন্বেষণার্থে বুদ্ধি শক্তির প্রয়ােগের ওপরে ততটা নির্ভর করে না যতটা করে অভিপ্রায়ের একনিষ্ঠতার সত্যের প্রতি অকপট স্পৃহার ওপরে ।GrHBen 163.3

    প্রার্থনা বিহীন কখনাে বাইবেল অধ্যয়ন করা উচিত না। একমাত্র পবিত্র আত্মায়ই আমাদেরকে ঐ সব জিনিসগুলাের গুরুত্ব অনুভব করাতে ও সহজে বােধগম করাতে পারে অথবা দুর্বোধ বিষয়গুলাে ভুল অর্থ করা থেকে রক্ষা করাতে পারে । ঈশ্বরের বাক্য হৃদয়ঙ্গম করতে হৃদয়গুলােকে প্রস্তত করা পবিত্র আত্মার কাজ যেন আমরা এর সৌন্দর্য অবলােকন করে মুগ্ধ হই, তাঁর সাবধান বাণীতে সর্তক হই, কিম্বা এর প্রতিজ্ঞাগুলােতে প্রাণ সঞ্চারিত ও বলপ্রাপ্ত হই। গীত রচকের প্রার্থনা আমরা আমাদের নিজেদের জন্য করতে পারি: “আমার নয়ন খুলিয়া দেও, যেন আমি দর্শন করি, তােমার ব্যবস্থায় আশ্চৰ্য্য আশ্চৰ্য্য বিষয় দেখি।” গীতসংহিতা ১১৯:১৮। প্রায়শঃ প্রলােভন অপ্রতিহতরূপে দেখা দেয় কারণ প্রার্থনা করতে ও বাইবেল পড়তে অবহেলার কারণে প্রলােভিত ব্যক্তি তৎক্ষণাতভাবে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞাগুলি স্মরণে আনতে পারেনা এবং শাস্ত্রীয় অস্ত্র দ্বারা শয়তানকে প্রতিহত করতে পারে না। তবে ঐশ্বরিক বিষয়সমূহ শিক্ষা পেতে ইচ্ছুক ব্যক্তিগণের চারপাশে স্বর্গীয় দূতগণ অবস্থান গ্রহণ করেন; ও মহা প্রয়ােজনের সময়ে তাঁরা প্রয়ােজনীয় সত্যগুলাে স্মরণ করিয়ে দেয় । এইরূপে “কারণ তিনি এমন প্রবল বন্যার ন্যায় আসিবেন,যাহা সদাপ্রভুর বায়ু দ্বারা তাড়িত।” যিশাইয় ৫৯:১৯।GrHBen 163.4

    যীশু তাঁর শিষ্যদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন; “কিন্তু সেই সহায়, পবিত্র আত্মা, যাঁহাকে পিতা আমার নামে পাঠাইয়া দিবেন, তিনি সকল বিষয়ে তােমাদিগকে শিক্ষা দিবেন, এবং আমি তােমাদিগকে যাহা যাহা বলিয়াছি সেই সকল স্মরণ করাইয়া দিবেন।” যােহন ১৪:২৬। কিন্তু পবিত্র আত্মার মাধ্যমে খ্রীষ্টের শিক্ষামালা পূর্ব থেকেই আমাদের হৃদয়ে সঞ্চয় করে রাখতে হবে যেন প্রয়ােজনের সময়ে স্মরণে আনতে পারি । “তােমার বচন আমি হৃদয়মধ্যে সঞ্চয় করিয়াছি,” দায়ূদ বলেন, “যেন তােমার বিরুদ্ধে পাপ না করি।” গীতসংহিতা ১১৯:১১।GrHBen 164.1

    যারা আপনাদের অনন্ত মঙ্গলের মূল্য দেয় তাদের সকলেরই সংশয়বাদের আক্রমনের বিরুদ্ধে সর্তক থাকা উচিত। প্রকৃত সত্যের স্ত ম্ভগুলাে ভীষণ ভাবে আক্রান্ত হবে। আধুনিক ধর্ম অবিশ্বাসের, ব্যাঙ্গোক্তি, কুতর্ক, ছলনাময় ও ক্ষতিকারক শিক্ষামালার নাগালের বাইরে অবস্থান করা অসম্ভব । শয়তান তাঁর প্রলােভনগুলির কৌশল শ্রেণীভেদে প্রয়ােগ করে থাকে । নিরক্ষরদের সে ঠাট্টা অথবা অবজ্ঞা দ্বারা আক্রমন করে, আবার শিক্ষিতদের সে বৈজ্ঞানিক আপত্তি প্রতিবাদ ও দার্শনিক যুক্তিতর্ক দিয়ে, দু’পক্ষকেই এমন ভাবে নিরূপিত যেন তা শাস্ত্রের ওপরে অবিশ্বাস অথবা ঘৃণার উদ্রেক করে। এমন কি সুপ্ত অভিজ্ঞ যুবকেরা খ্রীষ্টের বিশ্বাসের মৌলিক নীতির প্রতি সন্দেহ কটাক্ষ করতে সাহস হয়। আর এই যৌবনসুলভ ধর্ম অবিশ্বাসের কটাক্ষ অগভীর হলেও এর প্রভাব রয়েছে। এভাবে অনেকেই তাদের পূর্বপুরুষদের ধর্ম বিশ্বাসকে উপহাস করতে এবং অনুগ্রহের আত্মাকে অবজ্ঞা করতে পরিচালিত হয়। যে ব্যক্তি ঈশ্বরের পুত্রকে পদতলে দলিত করেছে, এবং নিয়মের যে রক্ত দ্বারা সে পবিত্ৰীকৃত হয়েছে, তাহা সামান্য জ্ঞান করেছে, এবং অনুগ্রহের আত্মার অপমান করেছে, সে কত অধিক নিশ্চয় ঘােরতর দণ্ডের যােগ্য না হবে । ইব্রীয় ১০:২৯। এমন অনেক জীবন ঈশ্বরের উদ্দেশে সম্মানের ও জগতের পক্ষে আশীর্বাদ স্বরুপ ছিল, ধর্ম অবিশ্বাসের কলুষিত শ্বাস প্রশ্বাসে ধ্বংস হয়ে গেছে। মানবীয় বুদ্ধিবৃত্তির দাম্ভিক সিদ্ধান্ত যারা বিশ্বাসী এবং ঐশ্বরিক রহস্যের ব্যাখ্যা করতে পারে বলে কল্পনা করে ও যারা ঐশ্বরিক জ্ঞানের সহায্যে ছাড়াই সত্যে উপনিত হয়, তারা সকলেই শয়তানের ফাদে জড়িয়ে পড়েছে ।GrHBen 164.2

    আমরা পৃথিবীর সবচেয়ে গূঢ়গম্ভীর সময়ে বাস করছি। জগতের অসংখ্য লােকের ভাগ্য প্রায় নির্ধারিত। আমাদের নিজের ভাবী মঙ্গল ও অন্য আত্মাদের পরিত্রাণও আমরা এখন কি কাজ সম্পাদন করছি তাঁর ওপর নির্ভর করছে । সত্যের আত্মার দ্বারা আমাদেরকে পরিচালনার প্রয়ােজন আছে । খ্রীষ্টের প্রত্যেক অনুসরণকারীর আন্তরিক ভাবে জিজ্ঞেস করা উচিত: “প্রভু আপনি বলুন, আমাকে কি করতে হবে?” উপবাস ও প্রার্থনা সহকারে প্রভুর সামনে আমাদের নিজেদের নম্র হতে হবে, এবং তাঁর বাক্যের বিষয়ে, বিশেষ করে বিচারের দৃশ্যাবলীর ওপরে যথেষ্ট ধ্যান করতে হবে । ঈশ্বর সম্পর্কিত বিষয় এক্ষণে গভীর ও জীবন্ত অভিজ্ঞতায় আমাদেরকে সচেষ্ট হতে হবে। নষ্ট করার মত সময় আমাদের আর নেই। আমাদের চারপাশে অপরিহার্য। গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাবলী ঘটছে; আমরা এখন শয়তানের মন্ত্রপুত ভূমিতে অবান করছি। হে ঈশ্বরের প্রহরীগণ, নিদ্রা যেও না; শত্রু কাছেই ওত পেতে রয়েছে, যে কোন সময় প্রস্তুত থেকো, তােমার ঢিলেমী ও তন্দ্রালুতায় সুযােগে, তােমার ওপরে ঝাপিয়ে পড়বে ও তােমাকে তাঁর শিকারে পরিনত করবে ।GrHBen 165.1

    অনেকে প্রতারিত হয় যেমন তাদের আসল রূপ ঈশ্বরের সামনে। প্রকাশ পায় যা তারা করেনি। এর জন্য তারা নিজেরা আপনাদেরকে অভিনন্দন জানায়, এবং ঈশ্বর যে ভাল ও মহান কাজগুলাে করতে লাবী করেছেন তা করতে অবহেলা করছে । ঈশ্বরের বাগানে গাছ হয়ে থাকায় তাদের পক্ষে যথেষ্ট নয়। তাঁর প্রত্যাশানুসারে ফল ধারণ করে তাদের দেখানাে উচিত। তাঁর অনুগ্রহের মাধ্যমে, শক্তিমন্ত হয়ে যে সব মঙ্গল ও যথাযথ কাজ তারা করতে পারতাে সে সকলে অকৃতকার্য হওয়ার জন্য তিনি তাদেরকে দায়ী করেন। স্বর্গের পুস্তকগুলিতে তাদেরকে ভুমির জঞ্জাল বলে নথিবদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি এই অবস্থাতেও এই শ্রেণীর লােকেরা পুরােপুরি আশাবিহীন নয়। যারা ঈশ্বরের অনুগ্রহ তুচ্ছ করেছে এবং তাঁর করুণার অপব্যবহার করেছে, অতি সহিষ্ণু প্রেমের হৃদয় তাদের পক্ষে ওকালতি করেন । এই জন্য উক্ত আছে, “হে নিদ্রাগত ব্যক্তি, জাগ্রত হও, এবং মর্তগণের মধ্য হইতে উঠ, তাহাতে খ্রীষ্ট তােমার উপরে আলােক উদয় করিবেন । অতএব তােমরা ভাল করিয়া দেখ, কিরূপে চলিতেছ, সুযােগ কিনিয়া লও, কেননা এই কাল মন্দ।” ইফিষীয় ৫:১৪-১৬।GrHBen 165.2

    যখন পরীক্ষার সময় আসবে, যারা ঈশ্বরের বাক্যকে তাদের জীবনের বিধি করে নিয়েছে তা প্রকাশিত হবে। গ্রীষ্মকালে চির হরিৎ বৃক্ষ ও অনান্য বৃক্ষের উল্লেখযােগ্য কোন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না; কিন্তু শীতের ঝঞ্ঝা যখন আসে অনান্য গাছের পাতা গুলাে ঝড়ে পড়লেও চিরসবুজ গাছের পাতাগুলাে অপরিবর্তিত থাকে । অতএব অসাধু অন্তঃকরণযুক্ত অধ্যাপক এক্ষণে প্রকৃত খ্রীষ্টানের থেকে পৃথক দেখা নাও যেতে পারে। কিন্তু আমাদের কাছে সময় প্রায় আসন্ন যখন পার্থক্য স্পষ্ট হবে। বিপক্ষতা ও প্রতিরােধ উৎপন্ন হােক, গােড়ামী ও অসহিষ্ণুতা আবার কর্তৃত্বে আসুক, ধর্ম বিশ্বাসের জন্যে নির্যাতন আসুক, আর উদাসীন, ভণ্ডামী ও কপটাচারী, দ্বিধাগ্রস্ত টলায়মান হবে এবং তাঁর ধর্মবিশ্বাস ত্যাগ করবে; কিন্তু প্রকৃত খ্রীষ্টান এক পাথরের ন্যায় অনড় থাকবে, এমনকি সমৃদ্ধির সচ্ছতার সময়ে যেমন ছিল, তাঁর আশা ও প্রত্যাশা তাঁর চেয়েও উজ্জ্বলতর হবে।GrHBen 166.1

    গীত রচক বলেন, “কেননা আমি তােমার সাক্ষ্যকলাপ ধ্যান করি।” “তােমার নির্দেশমালা দ্বারা আমার বুদ্ধিলাভ হয়, তাই আমি সমুদয় মিথ্যাপথ ঘৃণা করি।” গীতসংহিতা ১১৯:৯৯, ১০৪।GrHBen 166.2

    “ধন্য সেই ব্যক্তি যে প্রজ্ঞা পায়।” “সে জলের নিকটে রােপিত এমন বৃক্ষের ন্যায় হইবে, যাহা নদীকূলে মূল বিস্তার করে, গ্রীষ্মের আগমনে সে ভয় করিবে না, এবং তাহার পত্র সতেজ থাকিবে, অনাবৃষ্টির বৎসরেও সে নিশ্চিত থাকিবে, ফল দানেও নিবৃত্ত হইবে না।” হিতােপদেশ ৩:১৩; যিরমিয় ১৭:৮।GrHBen 166.3

    *****

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents