পথের পাশের-ভূমি
- মুখবন্ধ
- ভূমিকা
- দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা
-
- “প্রথমে অঙ্কুর, পরে শীষ”
- শ্যামাঘাস
- “একটি সরিষা দানার তুল্য”
- বীজবাপকের দৃষ্টান্ত থেকে অন্যান্য শিক্ষা
- তাড়ীর তুল্য
-
- মুক্তা
- জাল
- নূতন ও পুরাতন দ্রব্য
- দেয়ার জন্য যাচ্ঞা করা
- দুজন উপাসক
- “ঈশ্বর কি আপনার সেই মনোনীতদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার করিবেন না?”
-
- “হারাইয়া গিয়াছিল, এখন পাওয়া গেল”
- “এই বৎসরও ওটা থাকিতে দিউন”
- “রাজপথে রাজপথে ও গলিতে গলিতে যাও”
- ক্ষমার পরিমাণ
- যে অর্জন হারিয়ে যাওয়ার
-
- বলা ও করা
-
- বিবাহ বস্ত্রহীন
-
-
- “আমার প্রতিবেশী কে?”
- অনুগ্রহের পুরস্কার
- “বরের সহিত সাক্ষাৎ কর”
Search Results
- Results
- Related
- Featured
- Weighted Relevancy
- Content Sequence
- Relevancy
- Earliest First
- Latest First
- Exact Match First, Root Words Second
- Exact word match
- Root word match
- EGW Collections
- All collections
- Lifetime Works (1845-1917)
- Compilations (1918-present)
- Adventist Pioneer Library
- My Bible
- Dictionary
- Reference
- Short
- Long
- Paragraph
No results.
EGW Extras
Directory
পথের পাশের-ভূমি
বীজবাপকের দৃষ্টান্তটিতে মূলত যে বিষয়টি নিয়ে অধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে তা হচ্ছে পথের পাশের ভূমিতে পড়া বীজ। এই দৃষ্টান্তের মধ্য দিয়ে খ্রীষ্ট তাঁর শ্রোতাদেরকে পরোক্ষ ভাবে এই কথা বলতে চাচ্ছেন যে, তোমাদের পক্ষে আমার কাজের সমালোচনা করা নিরাপদ নয়, কিংবা আমার চিন্তার সাথে তোমাদের চিন্তার মিল না হলেই যে তোমরা আমার বাক্যকে হতাশায় অবজ্ঞা করবে তা উচিত নয়। বরং যেটা তোমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, আমার বার্তাটিকে তোমরা কীভাবে দেখছ? এই বার্তা গ্রহণ করা বা বর্জন করার উপরেই তোমাদের অনন্ত কালীন জীবনের নিয়তি নির্ভর করছে।COLBen 27.2
পথের পাশে পড়ে থাকা বীজ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বললেন, “যখন কেহ সেই রাজ্যের বাক্য শুনিয়া না বুঝে, তখন সেই পাপাত্মা আসিয়া, তাহার হৃদয়ে যাহা বপন করা হইয়াছিল, তাহা হরণ করিয়া লয়; এ সেই, যাহা পথের পার্শ্বে উপ্ত।”COLBen 28.1
পথের পাশে যে বীজ বপন করা হয়েছিল তা ঈশ্বরের বাক্যকে প্রতিনিধিত্ব করছে, যা একজন অমনোযোগী শ্রোতার হৃদয়ে পতিত হয়েছে। শক্ত পাথুরে পথ, যা বহু মানুষের ও পশুর যাতায়াতের কারণে শক্ত হয়ে উঠেছে, তা এই অন্তরকে উপস্থাপন করছে, যেখানে জগত সম্পর্কিত বহুবিধ চিন্তার আসা যাওয়ার কারণে ঈশ্বরের বাক্য স্থান পাচ্ছে না। তার আত্মা স্বার্থপর চিন্তা ও পাপপূর্ণ অভিলাষের কারণে “পাপের প্রতারণায় কঠিনীভূত” হয়ে উঠেছে, ইব্রীয় ৩:১৩। তার অন্তরে আত্মিক সমস্ত কার্যক্রম থমকে গেছে। মানুষ এই জগতের কথা শোনে কিন্তু তা বুঝতে পারে না। তারা তাদের প্রয়োজনটা বা তাদের বিপদটা বুঝতে পারে না। তারা খ্রীষ্টের ভালবাসা উপলব্ধি করে না এবং তারা তাঁর অনুগ্রহের বার্তাকে এমন কিছু ভেবে পাশ কাটিয়ে যায়, যা তাদের চিন্তার কোন বিষয়ই নয়।COLBen 28.2
পাখিরা যেমন পথের পাশে পতিত হওয়া বীজ খেয়ে ফেলার জন্য সদা প্রস্তুত থাকে, ঠিক তেমনি শয়তানও আমাদের আত্মা থেকে স্বর্গীয় সত্যের বীজ ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ওত পেতে থাকে। প্রভু ভয় পায় এই ভেবে যে সে হয়তোবা আত্মিকভাবে ঘুমিয়ে আছে, তাকে ঈশ্বরের এই বাক্য জাগিয়ে তুলতে পারবে না এবং তার শক্ত ও কঠিন হৃদয়ে তা প্রভাব ফেলতে পারবে না। যেখানে সুসমাচার প্রচারিত হয় সেখানে শয়তান ও তার বাহিনী এক সাথে জড়ো হয়ে থাকে। স্বর্গের দূতগণ যখন মানুষের অন্তরকে ঈশ্বরের বাক্য দ্বারা প্রভাবিত করার চেষ্টা করতে থাকেন, তখন শত্রু অর্থাৎ শয়তান ও তার বাহিনী সেই বাক্যের কার্যকারিতা বিনষ্ট করার চেষ্টা করতে থাকে, যেন তা মানুষের অন্তরে কোন প্রভাব সৃষ্টি করতে না পারে। শয়তান তার সমস্ত আক্রোশ ও ঘৃণা নিয়ে ঈশ্বরের আত্মার এই কাজ বিনষ্ট করে দেয়ার চেষ্টা করতে থাকে। খ্রীষ্ট যেখানে সব সময় তাঁর ভালবাসা দিয়ে আত্মা জয় করার চেষ্টা করেন, সেখানে শয়তান বারবারই তার সূক্ষ্ম চাল খাটিয়ে মানুষের মনোযোগ ত্রাণকর্তার দিক থেকে সরিয়ে দেয়। সে মানুষের মন পার্থিব চিন্তা দ্বারা পূর্ণ করে তোলে। সে মানুষের মনে শুধু সমালোচনা, পরচর্চা, সন্দেহ ও অবিশ্বাসের চেতনা জাগ্রত করে। বক্তার ভাষা নির্বাচন বা তার কথা বলার ভঙ্গি হয়তো শ্রোতার কাছে সন্তোষজনক হয় না এবং শয়তান তার মনের ভেতরে সেই ভাল না লাগাগুলোকে পুষে রাখতে ইন্ধন যোগায়। এভাবেই মানুষের জীবনের জন্য অপরিহার্য সত্য, যা ঈশ্বর অযাচিত ও অপরিমেয় ভাবে তাদের জন্য প্রদান করেছেন, তা তাদের মনে দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলতে পারে না।COLBen 28.3
শয়তানের অনেক সাহায্যকারী আছে। অনেকেই আছে যারা নিজেদেরকে খ্রীষ্টান বলে দাবী করে, কিন্তু তারা শয়তানকে অন্যদের হৃদয় থেকে সত্যের বীজ ছিনিয়ে নেয়ার জন্য সাহায্য করে থাকেন। অনেকেই আছে যারা ঈশ্বরের বাক্যের প্রচার শোনে এবং এর পর বাসায় গিয়ে সেই বাক্য নিয়ে সমালোচনা করে। তারা এমন ভাবে পবিত্র শাস্ত্রের বাণী প্রচার নিয়ে সমালোচনা শুরু করে, যেন তা, নেহায়েত সাধারণ কোন জাগতিক বিষয় নিয়ে করা বক্তৃতা বা কোন রাজনৈতিক নেতার ভাষণ। যে বাণীকে প্রভুর বাক্য হিসেবে বিবেচনা করা প্রয়োজন, তা নিয়ে এ ধরনের মানুষেরা হাসি ঠাট্টা করে ও ব্যাঙ্গঁ করে। পরিচর্যাকারীদের চরিত্র, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম, এবং সেই সাথে মণ্ডলীর সাধারণ সদস্যদের আচরণ নিয়ে মুক্ত আলোচনা করা হয়ে থাকে। সেখানে ঈশ্বরের বিধান ও বিচারকে অবজ্ঞা করা হয়, বার বার অপ্রাসঙ্গিক কথা নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং মন পরিবর্তন করে নি এমন মানুষেরা তা শুনতে থাকে। অনেক সময় এই ধরনের কথা বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের সামনেই করে থাকেন। এভাবে ঈশ্বরের বার্তা বাহকদের প্রতি সন্তানদের শ্রদ্ধা এবং বাক্যের প্রতি ভক্তি নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে ছোটবেলা থেকেই ঈশ্বরের বাক্যকে খুব হালকা ভাবে নিতে শেখে।COLBen 29.1
এভাবে খ্রীষ্ট বিশ্বাসীদের ঘরেই অনেক যুবক-যুবতিরা অধার্মিকতার শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে উঠছে। আর এদিকে তাদের বাবা মায়েরা প্রশ্ন করেন, কেন তাদের সন্তানেরা সুসমাচারের প্রতি এতটা কম আগ্রহ প্রদর্শন করে, এবং কেন তারা বাইবেলে প্রকাশিত সত্য সম্পর্কে এত সহজে সন্দেহ প্রকাশ করছে। তারা এই ভেবে অবাক হন যে, তাদেরকে নৈতিক ও ধর্মীয় শিক্ষা প্রদান করা ও সেই শিক্ষার দ্বারা প্রভাবিত করা কেন এতটা কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে। তারা দেখতে পান না যে, তাদের নিজেদের গড়া দৃষ্টান্তই তাদের সন্তানদের হৃদয়কে কঠিন করে তুলেছে। ভাল বীজ যখন শিকড় গাঁড়ার জায়গা খুঁজে পায় না, তখন শয়তান তা ছিনিয়ে নেয়।COLBen 29.2