গুপ্ত ধনের অন্বেষণ
- মুখবন্ধ
- ভূমিকা
- দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা
-
- “প্রথমে অঙ্কুর, পরে শীষ”
- শ্যামাঘাস
- “একটি সরিষা দানার তুল্য”
- বীজবাপকের দৃষ্টান্ত থেকে অন্যান্য শিক্ষা
- তাড়ীর তুল্য
-
- মুক্তা
- জাল
- নূতন ও পুরাতন দ্রব্য
- দেয়ার জন্য যাচ্ঞা করা
- দুজন উপাসক
- “ঈশ্বর কি আপনার সেই মনোনীতদের পক্ষে অন্যায়ের প্রতিকার করিবেন না?”
-
- “হারাইয়া গিয়াছিল, এখন পাওয়া গেল”
- “এই বৎসরও ওটা থাকিতে দিউন”
- “রাজপথে রাজপথে ও গলিতে গলিতে যাও”
- ক্ষমার পরিমাণ
- যে অর্জন হারিয়ে যাওয়ার
-
- বলা ও করা
-
- বিবাহ বস্ত্রহীন
-
-
- “আমার প্রতিবেশী কে?”
- অনুগ্রহের পুরস্কার
- “বরের সহিত সাক্ষাৎ কর”
Search Results
- Results
- Related
- Featured
- Weighted Relevancy
- Content Sequence
- Relevancy
- Earliest First
- Latest First
- Exact Match First, Root Words Second
- Exact word match
- Root word match
- EGW Collections
- All collections
- Lifetime Works (1845-1917)
- Compilations (1918-present)
- Adventist Pioneer Library
- My Bible
- Dictionary
- Reference
- Short
- Long
- Paragraph
No results.
EGW Extras
Directory
গুপ্ত ধনের অন্বেষণ
ঈশ্বরের বাক্যই হওয়া উচিত আমাদের অধ্যয়নের বিষয়বস্তু। আমাদের সন্তানদেরকে এর সত্যে শিক্ষা দান করতে হবে। এটি এক অফুরন্ত ধন; কিন্তু মানুষ এই ধন ভাণ্ডার খুঁজে পেতে ব্যর্থ হয়, কারণ যখন সেটি তাদের নাগালের মধ্যে থাকে, তখন তারা তা অন্বেষণ করে না। অনেকেই এই সত্যের বিকল্প কোন কিছু পেয়েই সন্তুষ্ট থাকে। তারা বাহ্যিক চাকচিক্য দেখে খুশি হয় এবং ভাবে যে এটাই তার জন্য যথেষ্ট। তারা অন্যান্য শিক্ষা ও বাণী শুনে থাকে ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। কিন্তু তারা ঈশ্বরের বাক্য থেকে গুপ্ত ধন খুঁজে বের করার জন্য একাগ্রতা ও নিষ্ঠা সহকারে অন্বেষণ করে না। কিন্তু মানুষের জ্ঞান ও উদ্ভাবন শুধু যে অনির্ভরযোগ্য তাই শুধু নয়, সেই সাথে তা বিপজ্জনকও বটে। কারণ তা মানুষকে এমন এক স্থানে বসায়, যে স্থানটি শুধুমাত্র ঈশ্বরের অধিকার। এগুলো মানুষের বলা কথাকে এমন স্থানে নিয়ে বসায়, যেখানে থাকার কথা শুধুমাত্র সেই বাক্যের স্থান, যে বাক্য “সদাপ্রভু কহেন”। COLBen 88.2
খ্রীষ্টই সেই সত্য। তাঁর বাক্য সকল সত্য এবং তাঁর বাক্যের গভীরে এক নিগূঢ় অর্থ রয়েছে যা বাইরে থেকে অনুধাবন করা যায় না। খ্রীষ্টের সমস্ত বাণীর এক অন্তর্নিহিত অর্থ রয়েছে যা আমরা বাহ্যিক ভাবে অনুধাবন করতে পারি না। যে সমস্ত মানুষের মন পবিত্র আত্মার দ্বারা উজ্জীবিত হয়, তারা এই বাণীর মূল্য অনুধাবন করতে পারে। যদিও বা এই সত্য বাণী লুক্কায়িত থাকে, তথাপি তারা সত্যের মূল্যবান এই রত্ন ঠিকই খুঁজে বের করতে পারে। COLBen 89.1
মানবীয় তত্ত্বকথা এবং আদর্শ থেকে আমরা কখনো ঈশ্বরের বাক্য অনুধাবন করতে পারবনা। যারা মনে করে, তারা দর্শন শাস্ত্র বোঝে তারা ভাবে যে, ঈশ্বরের বাক্যের অর্থ উদ্ধার করার জন্য এবং মণ্ডলীতে ভ্রান্ত মতবাদের প্রবেশ রুদ্ধ করার জন্য তাদের কাছে আসাটা জরুরি। কিন্তু তাদের ব্যাখ্যাই বরং মানুষকে নিয়ে আসে ভুল ব্যাখ্যা এবং ভ্রান্ত মতবাদের কাছে। মানুষ এই ব্যাখ্যা ও মতাদর্শকে বাক্যের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ মনে করে তা পাওয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করতে থাকে। কিন্তু তারা যে বিষয়ে পরিষ্কার জ্ঞান লাভ করতে চেয়েছিল তা প্রায়শই আরও ঘোলাটে হয়ে যায়। COLBen 89.2
পুরোহিত ও ফরীশীরা মনে করেছিল যে, ঈশ্বরের বাক্যের উপরে তাদের মন গড়া নিজস্ব ব্যাখ্যা বসিয়ে তারা খুব মহান কোন কাজ করছিল। কিন্তু যীশু তাদের সম্পর্কে বলেছেন, “ইহাই কি তোমাদের ভ্রান্তির কারণ নয় যে, তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের পরাক্রম?” মার্ক ১২:২৪। তিনি তাদেরকে “মনুষ্যদের আদেশ ধর্মসূত্র” বলে শিক্ষা দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত করেছিলেন, মার্ক ৭:৭। যদিও তারা ছিল ঈশ্বরের বাণীর শিক্ষক, যদিও তাদের দায়িত্ব ছিল তাঁর বাক্য, তথাপি তারা সেই বাক্য অনুসারে কাজ করত না। শয়তান তাদের চোখে আচ্ছাদন দিয়ে রেখেছিল যেন তারা এর সত্যিকার রূপ দেখতে না পায়। COLBen 89.3
আজকের দিনে এটাই অনেকের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক মণ্ডলীই এই পাপে দোষীকৃত হয়েছে। আজকের দিনের অনেক মানুষ যিহূদী ধর্ম শিক্ষকদের মত সেই একই কাজের পুনরাবৃত্তি করছে যা আমাদেরকে এক বিপদ থেকে মহা বিপদের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। তারা ঐশ্বরিক বাণীর ভুল ব্যাখ্যা করছে এবং স্বর্গীয় সত্য সম্পর্কে করা তাদের এই ভ্রান্ত মতাদর্শের কারণে মানুষের অন্তরে ও মনে সৃষ্টি হচ্ছে জটিলতা ও অন্ধকারাচ্ছন্নতা। COLBen 90.1
পবিত্র শাস্ত্র কোন মানবীয় রীতি নীতি বা দৃষ্টিভঙ্গির টিমটিমে আলোর নিচে এনে পড়ার প্রয়োজন নেই। টর্চ জ্বালিয়ে সূর্য দেখার চেষ্টা করা যেমন বোকামি, তেমনি মানবীয় রীতি নীতি বা কল্পনার ভিত্তিতে পবিত্র শাস্ত্র ব্যাখ্যা করতে যাওয়াটাও চরম বোকামি। ঈশ্বরের পবিত্র বাক্য পড়ার ও তার গৌরব আরও প্রকাশ করার জন্য পার্থিব দর্শনের আলোর প্রয়োজন নেই। ঈশ্বরের বাক্য নিজেই এক অত্যুজ্জ্বল আলো, যা ঈশ্বরের গৌরব ও মহিমা প্রকাশ কওে, এবং এর পাশে এসে দাঁড়ালে অন্য সব আলো ম্লান হয়ে যায়।COLBen 90.2
কিন্তু পবিত্র শাস্ত্র আরও একাগ্র ভাবে অধ্যয়ন করার ও খুব নিখুঁত ভাবে তদন্ত করার প্রয়োজন আছে। সত্য সম্পর্কে খুব সূক্ষ্ম এবং সুস্পষ্ট ধারণা থাকলে তা মানুষের ঐশ্বরিক জ্ঞান আরও বৃদ্ধি করে। একাগ্রতা, ধৈর্য, ও অধ্যবসায় না থাকলে পার্থিব আশীর্বাদ লাভ করা যায় না। যদি মানুষ ব্যবসায়ে সাফল্য লাভ করতে চায় তাহলে তাকে অবশ্যই তার জন্য ইচ্ছা থাকতে হবে এবং সাফল্য লাভের জন্য বিশ্বাস সহকারে অপেক্ষা করতে হবে। কাজেই একই ভাবে পরিশ্রম ছাড়া আমরা কখনোই আত্মিক জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হব না। যারা সত্যের ধন ভাণ্ডার আবিষ্কার করার ইচ্ছা পোষণ করবে তাদের অবশ্যই এমন ভাবে তা অনুসন্ধান করতে হবে, যেভাবে খনি থেকে মূল্যবান রত্ন উত্তোলন করার জন্য অনুসন্ধান করা হয়। হতাশ বা সন্দেহপূর্ণ মন নিয়ে করা কাজ কখনো সাফল্যের মুখ দেখতে পায় না। যুবক ও বৃদ্ধ প্রত্যেকের জন্যই ঈশ্বরের বাক্য পাঠ করা শুধু যথেষ্ট নয়, বরং সেই সাথে প্রত্যেককে তা আন্তরিকতার সহিত অধ্যয়ন করতে হবে এবং এতে নিহিত ধন খুঁজে পাওয়ার জন্য একাগ্রতার সাথে প্রার্থনা ও অন্বেষণ করতে হবে। যারা এভাবে এই ধনের অন্বেষণ করবে তাদেরকে খ্রীষ্ট বাক্যের উপলব্ধি দান করবেন। COLBen 90.3
আমাদের পরিত্রাণ নির্ভর করছে পবিত্র শাস্ত্রের মৌলিক সত্য সম্পর্কিত জ্ঞানের উপর। এটাই ঈশ্ব রের ইচ্ছা যে আমরা এই জ্ঞান লাভ করি। অনুসন্ধান কর, ও তোমরা ক্ষুধিত অন্তর নিয়ে বাইবেল অনুসন্ধান কর। খনিতে শ্রমিকরা যেমন মাটির গভীরে খুঁড়ে খুঁড়ে স্বর্ণের আকর খুঁজে বের করে, তেমনি ঈশ্বরের বাক্যের আবিস্কার কর। ঈশ্বরের সাথে তোমরা সম্পর্ক কি এবং তোমার জীবনের জন্য তাঁর পরিকল্পনা কী তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত কোন মতেই এই অভিযান বন্ধ কর। খ্রীষ্ট ঘোষণা করেছেন, “আর তোমরা আমার নামে যাহা কিছু যাচ্ঞা করিবে, তাহা আমি সাধন করিব, যেন পিতা পুত্রে মহিমানি¡ত হন। যদি আমার নামে আমার কাছে কিছু যাচ্ঞা কর, তবে আমি তাহা করিব।” যোহন ১৪:১৩, ১৪। COLBen 91.1
যার ভেতরে ধার্মিকতা ও তালন্ত রয়েছে, তিনি চিরন্তন বাস্তবতার রূপ দেখতে পান, কিন্তু কখনো কখনো তা বুঝতে ব্যর্থ হন, কারণ যা দেখা দেয় তা আবৃত করে রাখে সেই মহিমাকে, যা দেখা যায় না। যিনি ঈশ্বরের গুপ্ত ধন খুঁজে পাওয়ায় সাফল্য অর্জন করতে চান, তাকে অবশ্যই এই পৃথিবীর সমস্ত বস্তুর চেয়ে আরও উচ্চতর কোন কিছুর প্রতি নিজ লক্ষ্য স্থির করতে হবে। তার সমস্ত ভাল লাগা এবং সমস্ত যোগ্যতা দিয়ে এই অনুসন্ধানের কাজে মনোনিবেশ করতে হবে। COLBen 91.2
পবিত্র শাস্ত্র থেকে পাওয়া যায়, এমন অনেক জ্ঞানের দরজা আমাদের অবাধ্যতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। উপলব্ধির অর্থ হচ্ছে ঈশ্বরের আদেশের প্রতি বাধ্যতা। মানুষের নিজস্ব চিন্তাধারা এবং জেদের স্বার্থে পবিত্র শাস্ত্র কখনো ব্যবহার করা যায় না। যারা নম্রতার সঙ্গে ঈশ্বরীয় সত্যের জ্ঞান লাভ করতে চায় ও তা মান্য করতে চায় কেবল তারাই পবিত্র শাস্ত্রের অর্থ অনুধাবন করতে পারে। COLBen 91.3
আপনি কি জিজ্ঞেস করেছেন পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমি কী করব? আপনাকে অবশ্যই আগের জীবনের সমস্ত চিন্তাধারা, মতামত, আপনার কল্পনা প্রসূত আদর্শ ও ধারণা ত্যাগ করে ঈশ্বরের বাক্যের কাছে আসতে হবে। যদি আপনি আপনার নিজস্ব চিন্তা ধারার ভিত্তিতে পবিত্র শাস্ত্রকে আয়ত্ব করার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি কখনোই সত্যে পৌঁছাতে পারবেন না। প্রভু যা বলতে চেয়েছেন তার ভিত্তিতে অনুসন্ধান করার চেষ্টা করুন। এভাবে অনুসন্ধান করতে করতে দেখবেন যে, আপনার নিজস্ব ধ্যান ধারণার সাথে বাক্যের সত্যের আদৌ’কোন মিল নেই। কিন্তু তখন আপনার চিন্তার সাথে মিল রাখার জন্য বাক্যের অর্থ ভুল ভাবে গ্রহণ করবেন। বরং বাক্যে ঠিক যে শিক্ষাটি দেয়া হয়েছে সেটিই গ্রহণ করুন। আপনার অন্তর ও মন খুলে দিয়ে ঈশ্বরের বাক্যের আশ্চর্য বিষয়গুলো আবিষ্কার করুন। COLBen 91.4
এই পৃথিবীর উদ্ধারকর্তা হিসেবে খ্রীষ্টের উপরে বিশ্বাস স্থাপনের আহ্বানের মধ্য দিয়ে অন্তর এই স্বর্গীয় ধন ভাণ্ডারে প্রবেশের অনুমোদন পেয়ে থাকে। এই বিশ্বাসের সাথে অঙ্গাঙ্গিভাবে যুক্ত রয়েছে আমাদের অনুশোচনা এবং চরিত্রের রূপান্তর। বিশ্বাস ধারণ করার অর্থ হচ্ছে সুসমাচার ধন খুঁজে পাওয়া এবং এর সমস্ত বাধ্য বাধকতার প্রতি অনুগত হওয়া। COLBen 92.1
“নূতন জন্ম না হইলে কেহ ঈশ্বরের রাজ্য দেখিতে পায় না।” যোহন ৩:৩। সে হয়তো অনেক বিষয়ে ধারণা করতে পারে এবং কল্পনা করতে পারে, কিন্তু বিশ্বাসের দৃষ্টি দিয়ে না দেখলে সে কখনো এই ধন দেখতে পায় না। এই অপরিমেয় ধন যেন আমাদের জন্য গচ্ছিত রাখা সম্ভব হয় এ জন্যই খ্রীষ্ট তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। কিন্তু বিশ্বাসের মধ্য দিয়ে তাঁর রক্তের দ্বারা পুনর্জন্ম গ্রহণ না করলে পাপের ক্ষমা লাভ করা সম্ভব নয়, কিংবা হারিয়ে যাওয়া আত্মার জন্য কোন ধন লাভও সম্ভব নয়। COLBen 92.2
ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যস্থিত সত্য চিহ্নিত করার জন্য পবিত্র আত্মার আলোকপাতের প্রয়োজন রয়েছে। যে পর্যন্ত না সূর্য সমস্ত অন্ধকার সরিয়ে তার আলোক রশ্মি দ্বারা পৃথিবীকে প্লাবিত করে, সে পর্যন্ত প্রকৃতির চমৎকার দৃশ্য অবলোকন করা সম্ভব হয় না। সেভাবে ধার্মিকতার সূর্যের অত্যুজ্জ্বল আলোক রশ্মি যে পর্যন্ত প্রকাশিত হচ্ছে, ততক্ষণ ঈশ্বরের বাক্যের মধ্যস্থিত ধন সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে না। COLBen 92.3
পবিত্র আত্মা ঈশ্বরের অপরিসীম ভালবাসা নিয়ে স্বর্গ থেকে অবতীর্ণ হয়েছেন। তিনিই ঐশ্বরিক বিষয়গুলো উন্মোচন করে দেন, যেন খ্রীষ্টের প্রতি সুদৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে এমন প্রত্যেকটি আত্মা তা উপলব্ধি করতে পারে। যে সত্যের উপরে মানুষের আত্মার পরিত্রাণ নির্ভর করে তা তাঁর শক্তিতে মানুষের অন্তরে গেঁথে যায়। তিনি মানুষের জীবনের পথ এতটা সরল করে তোলেন যে, সেখানে আর কোন ভ্রান্তি থাকে না। যখন আমরা পবিত্র শাস্ত্র পাঠ করব, তখন আমাদের প্রার্থনা করা প্রয়োজন যেন ঈশ্বরের পবিত্র আত্মার আলো বাক্যের উপরে পতিত হয়, যেন আমরা এর অন্তর্নিহিত ধন যথাযথভাবে দেখতে পারি ও অনুধাবন করতে পারি। COLBen 92.4