Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents
সুষম শিক্ষা - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First

    ১৯ - ইতিহাস এবং ভবিষ্যদ্বাণী

    “পূর্ব হইতে এ কথা কে জ্ঞাত করিয়াছে ...
    আমি সদাপ্রভু কি করি নাই? আমি ব্যতীত অন্য ঈশ্বর নাই।”

    মানুষের অধিকারের যা যা রয়েছে, তার মধ্যে বাইবেল সবচেয়ে পুরাতন এবং সবচেয়ে বােধগম্য ইতিহাস। এটি সরাসরি চিরন্তন সত্যের উৎস থেকে এসেছে, এবং যুগ যুগ ব্যাপী ঈশ্বরিক ক্ষমতা এর পবিত্রতা রক্ষা করে রেখেছে। এটি সুদূর অতীতকে আলােকিত করে, যেখানে মানুষ প্রবেশ করার জন্য কেবল বৃথাই চেষ্টা করে থাকে। ঈশ্বরের বাক্যে কেবল আমরা সেই শক্তি লক্ষ্য করি যা পৃথিবীর ভিত্তি স্থাপন করেছিল এবং যা আকাশমণ্ডলে বিস্তৃত হয়েছিল। কেবল এখানেই আমরা বিভিন্ন জাতির উৎপত্তির বিশ্বাসযােগ্য নথিপত্র পাই। কেবল এখানেই আমাদের বংশের একটি ইতিহাস দেয়া হয়েছে যা মানব অহংকার এবং কুসংস্কার দ্বারা কলঙ্কিত হয় নি।EdBen 162.1

    মানব ইতিহাসের বর্ষবিবরণে বিভিন্ন জাতির উৎপত্তি, সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন, মানুষের ইচ্ছা, এবং ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। ঘটনাবলির উদ্ভাবন মনে হয় তাঁরই ক্ষমতা, উচ্চাকাঙ্খ বা খেয়াল অনুসারে হিরিকৃত হয়। কিন্তু ঈশ্বরের বাক্যের যবনিকা এক পাশে সরিয়ে রাখা হয়, আর আমরা পিছনে, উপরে সবই দেখতে পারি এবং সকল অভিনয় এবং মানব স্বার্থ এবং ক্ষমতা এবং উন্মত্ততার মধ্য দিয়ে ভূত-ভবিষ্যৎ সকলই দেখতে পারি, এর মধ্য দিয়ে সবচেয়ে দয়ালু ব্যক্তির প্রতিনিধিদেরও দেখতে পাই, যারা নীরবে, ধৈর্য সহকারে তাঁর নিজের ইচ্ছার মন্ত্রণা অনুসারে কাজ করে যাচ্ছে।EdBen 162.2

    বাইবেল, ইতিহাসের প্রকৃত তত্ত্ব প্রকাশ করে। ঐ সব বাক্যে অতুলনীয় সৌন্দর্য এবং সহানুভূতি, যা আথীনীর সাধুদের কাছে পৌল কর্তৃক বলা হয়েছে, যাতে গােষ্ঠী এবং জাতির সৃষ্টি এবং বিন্যাসে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য স্থাপন করা হয়েছে: “আর তিনি এক ব্যক্তি হইতে মনুষ্যদের সকল জাতিকে উৎপন্ন করিয়াছেন, যেন তাহারা সমস্ত ভূতলে বাস করে; তিনি তাহাদের নির্দিষ্ট কাল ও নিবাসের সীমা স্থির করিয়াছেন; যেন তাহারা ঈশ্বরের অন্বেষণ করে, যদি কোন মতে হাতড়িয়া হাতড়িয়া তাঁহার উদ্দেশ পায়; অথচ তিনি আমাদের কাহারও হইতে দূরে নহেন।” প্রেরিত ১৭:২৬, ২৭। ঈশ্বর ঘােষণা করেন যে, যে কেহ ইচ্ছা করে সে “নিয়মরূপ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে। যিহিষ্কেল ২০:৩৭। সৃষ্টিতে তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যেন, পৃথিবী এমন মানব গােষ্ঠী দ্বারা পরিপূর্ণ হয় যাদের অস্তিত্ব তাদের এবং একে অন্যের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ হয়, এবং তাদের স্রষ্টার কাছে। সমাদরণীয় হয়। যারা ইচ্ছা করে, তারা এই উদ্দেশ্যে আপনাদের নিযুক্ত করতে পারে। তাদের বিষয় বলা হয়েছে, “সেই যে প্রজাবৃন্দকে আমি আপনার নিমিত্ত নির্মাণ করিয়াছি, তাহারা আমার প্রশংসা প্রচার করিবে।” যিশাইয় ৪৩:২১ ।EdBen 162.3

    ঈশ্বর তার ব্যবস্থার মধ্যে নীতিমালা প্রকাশ করেছেন যার মধ্যে বিভিন্ন জাতি এবং ব্যক্তিবিশেষের প্রকৃত উন্নতি নির্ভর করে। মােশি ইস্রায়েলের কাছে ঈশ্বরের ব্যবস্থা ঘােষণা করে বলেছিলেন, “তাহাই তােমাদের জ্ঞান ও বুদ্ধিস্বরূপ হইবে” “বস্তুত ইহা তােমাদের পক্ষে নিরর্থক বাক্য নহে, কেননা ইহা তােমাদের জীবন।” দ্বিতীয় বিবরণ ৪:৬; ৩২:৪৭। ইস্রায়েলের কাছে আশীর্বাদের নিশ্চয়তা একই শর্তাবলির ভিত্তি এবং সুবিস্তৃত আকাশমণ্ডলের নিচে প্রত্যেক জাতির কাছে একই নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে।EdBen 163.1

    পৃথিবীর প্রত্যেক শাসক স্বর্গের দেয়া ক্ষমতা ব্যবহার করে থাকে: এবং তার ক্ষমতার ব্যবহারের ওপরেই তার কৃতকার্যতা নির্ভর করে। প্রত্যেকের কাছে স্বর্গীয় দর্শকের বাণী, “তুমি আমাকে না জানিলেও আমি তােমার কটি বন্ধন করিব।” যিশাইয় ৪৫:৫। আর নকূখনিৎসরের কাছে। প্রকাশিত বাণী প্রত্যেকের কাছে জীবনের শিক্ষা স্বরূপ- “আপনি ধার্মিকতা দ্বারা আপন পাপ সকল ও দুঃখীদের প্রতি কৃপা প্রদর্শন দ্বারা আপন অপরাধ সকল মুছিয়া ফেলুন; হয়ত আপনার শান্তিকাল বৃদ্ধি পাইবে।”EdBen 163.2

    এ সব বুঝতে হলে উপলব্ধি করতে হবে যে, “ধার্মিকতা জাতিকে উন্নত করে,” “কারণ ধার্মিকতায় সিংহাসন স্থির থাকে, এবং “দয়ায় আপন সিংহাসন স্থির রাখেন।” (হিতােপদেশ ১৪:৩৪; ১৬:১২; ২০:২৮); “রাজাদিগকে পদভ্রষ্ট করেন, ও রাজাদিগকে পদস্থ করেন;” তাঁর অভিব্যক্তির নীতিমালার কর্মক্ষমতার (দানিয়েল ২:২১) এই সকল বুঝতে হলে ইতিহাসের তত্ত্ববিদ্যা সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন করতে হবে।EdBen 163.3

    একমাত্র ঈশ্বরের বাক্যে এটি পরিষ্কারভাবে স্থাপন করা হয়েছে। এখানে দেখান হয়েছে যে, বিভিন্ন জাতি এবং ব্যক্তি জীবনের শক্তি, সুযােগসুবিধার মধ্যে পাওয়া যায় না যা আপাতঃদৃষ্টিতে তাদের অজেয় করে; এটি তাদের অহঙ্কারের মহত্ত্বের মধ্যে পাওয়া যায় না। এটি তাদের আনুগত্যের দ্বারা পরিমিত হয় যার মাধ্যমে তারা ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূর্ণ করে।EdBen 164.1

    পুরাকালিন বাবিলের ইতিহাসে এই সত্যের একটি দৃষ্টান্ত পাওয়া যায়। রাজা নবৃখনিৎসরের জাতীয় সরকারের প্রকৃত উদ্দেশ্য একটি বিশাল গাছের প্রতীকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছিল, যার উচ্চতা, “গগণস্পর্শী হইল, সমস্ত পৃথিবীর প্রান্ত পর্যন্ত দৃশ্যমান হইল। তাহার সুন্দর সুন্দর পত্র ও বিস্তর ফল ছিল, তাহার মধ্যে সকলের জন্য খাদ্য ছিল, তাহার তলে মাঠের পশুগণ ছায়া প্রাপ্ত হইত; তাহার শাখায় আকাশের পক্ষিগণ বাস করিত, এবং সমস্ত প্রাণী তাহা হইতে খাদ্য পাইত।” দানিয়েল ৪:১১, ১২। এই উপস্থাপনাটি এমন একটি সরকারের চরিত্র প্রকাশ করে যা ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূর্ণ করে—একটি সরকার যা জাতিকে রক্ষা করে এবং গেঁথে তােলে।EdBen 164.2

    ঈশ্বর বাবিলকে উন্নীত করেছিলেন যেন বাবিল এই উদ্দেশ্য পূর্ণ করতে পারে। জাতি যখন এক অসমকক্ষ সম্পদ ও ক্ষমতার শিখরে পৌছিল তখন জাতি উন্নতি সাবন করল- যা শাস্ত্রে অনুপ্রাণিত প্রতীক একটি “স্বর্ণময় মস্তক” দ্বারা দেখান হয়েছিল। দানিয়েল ২:৩৮।EdBen 164.3

    কিন্তু যে ক্ষমতা রাজাকে উন্নত করেছিল, তা উপলব্ধি করতে তিনি ব্যর্থ হলেন। নবুখদনিৎসর মনের গর্বের সঙ্গে বললেন, “এ কি সেই মহতী বাবিল নয়, যাহা আমি আপন বলের প্রভাবে ও আপন প্রতাপের মহিমার্থে রাজধানী করিবার জন্য নির্মাণ করিয়াছি?” দানিয়েল ৪:৩০।EdBen 164.4

    মানুষের রক্ষাকারী না হয়ে বরং বাবিল গর্বিত এবং নিষ্ঠুর তাড়নাকারী। অনুপ্রাণিত বাক্য ইস্রায়েলের শাসনকর্তাদের নিষ্ঠুরতা এবং লােভ চিত্রিত করে যা পৃথিবীর সৃষ্টি অবধি বাবিল এবং অন্যান্য অনেক রাজ্যের পতনের বিষয় প্রকাশ করে: “তােমরা মেদ খাইয়া থাক, মেষ লােম পরিধান করিয়া থাক, পুষ্ট মেষ বলিদান করিয়া থাক, কিন্তু মেষগণকে পালন কর না। তােমরা দুর্বলদিগকে সবল কর নাই, পীড়িতের চিকিৎসা কর নাই, ভগ্নাঙ্গের ক্ষত বাঁধ নাই, দূরীকৃতকে ফিরাইয়া আন নাই, হারানের অন্বেষণ কর নাই, কিন্তু বল ও উপদ্রপূর্বক তাহাদের শাসন করিয়াছ।” যিহিষ্কেল ৩৪:৩, ৪ ।EdBen 164.5

    বাবিলের শাসনকর্তার কাছে স্বর্গীয় দর্শকের বাণী: “হে রাজন, নবৃখনিৎসর! তােমাকে বলা হইতেছে, তােমার রাজত্ব তামা হইতে গেল।” দানিয়েল ৪:৩১।EdBen 165.1

    “হে অনূঢ়া বাবিল-কন্যে, তুমি নামিয়া ধুলিতে বস; হে কল্দীয়দের কন্যে, ভূমিতে বস, সিংহাসন নাই। ... নীরবে বস, অন্ধকারে আশ্রয় লও কেননা তুমি আর রাজ্য সকলের ঠাকুরণী বলিয়া আখ্যাত হইবে না।” যিশাইয় ৪৭:১-৫ ।EdBen 165.2

    “হে জলরাশির উপরে বাসকারিণি! ধনকোষে ঐশ্বর্যশালিনি! তােমার শেষকাল, তােমার ধনলােভের পরিণাম উপস্থিত।”EdBen 165.3

    “আর বাবিল-রাজ্য সকলে সেই রত্ন ও কলদীয়দের শ্লাঘার সেই লাবন্য— ঈশ্বর কর্তৃক উৎপাটিত সদোম ও ঘমােরার ন্যায় হইবে।”EdBen 165.4

    “আর আমি ঐ নগর শজারুর অধিকার করিব, জলাভূমি করিব, সংহাররূপ মার্জনী দ্বারা মার্জন করিব, ইহা বাহিনীগণের সদাপ্রভু কহেন।” যিরমিয় ৫১:১৩; যিশাইয় ১৩:১৯; ১৪:২৩ ।EdBen 165.5

    যে জাতি কাজের মঞ্চে এসেছে তাকে পৃথিবীতে স্থান অধিকারের অনুমতি দেয়া হয়েছে, যেন দেখা যায় যে, তা “নিরীক্ষণকারী এবং পবিত্র ব্যক্তির” উদ্দেশ্য পূরণ করে কিনা। বিশ্বের প্রধান সাম্রাজ্যগুলাের উত্থান ও পতনের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে—বাবিল, মাদীয় পারস্য, গ্রীস, এবং রােম। এ সবের প্রতিটির এবং কম শক্তিশালীর ক্ষেত্রে ইতিহাস আপনাআপনি পুনরাবৃত্তি হয়েছে। এদের প্রত্যেকটির পরীক্ষাকাল ছিল, প্রত্যেকেই ব্যর্থ হয়েছে, তার প্রতাপ নিপ্রভ হয়েছে, ক্ষমতা বিচ্ছিন্ন হয়েছে, এবং অন্য লােক এর স্থান অধিকার করেছে।EdBen 165.6

    জাতিগণ ঈশ্বরের নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করল, আর প্রত্যাখ্যান করে তাদের নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনল, তা সত্ত্বেও তাদের সর্বপ্রকারের আন্দোলনের মধ্য দিয়েও ঈশ্বরের ঐশ্বরিক উচ্চতর ক্ষমতার উদ্দেশ্য কার্যকর হয়ে আসছিল।EdBen 165.7

    এই শিক্ষাটি যিহিস্কেল ভাববাদীর কাছে একটি চমৎকার প্রতীকের মাধ্যমে দেয়া হয়েছিল, আর এ সময় তিনি কলদীয়দের দেশে বন্দী ছিলেন। দর্শনটি এমন একটি সময়ে দেয়া হল, যখন যিহিষ্কেল দুঃখপূর্ণ স্মৃতি এবং সংকটময় পূর্বাভাস দ্বারা মনােক্ষুন্ন ছিলেন। তার পিতার দেশ আজ উচ্ছিন্ন।EdBen 166.1

    যিরূশালেম জনশূন্য। ভাববাদী এখন একটি দেশে একজন বিদেশী, যেখানে উচ্চাকাঙ্খর নিষ্ঠুরতা তুঙ্গে উঠেছিল। তিনি যে দিকে তাকান সে দিকেই প্রজা-পীড়ক শাসকের শাসন এবং অন্যায় দেখতে পান; তার আত্মা অবসন্ন হল, আর তিনি দিন-রাত কেবল শােক করতে থাকলেন। কিন্তু তার কাছে দেয়া প্রতীকগুলাে, পার্থিব শাসনকর্তাদের ক্ষমতারও চেয়েও মহান।EdBen 166.2

    কবার নদীতীরে, যিহিস্কেল উত্তর দিক থেকে আসা একটি ঘূর্ণিঝড় দেখতে পেলেন, “বৃহৎ মেঘ ও জাজ্বল্যমান অগ্নি আসিল, এবং তাহার চারিদিকে তেজ ও তাহার মধ্যস্থানে অগ্নির মধ্যবর্তী প্রতপ্ত ধাতুর ন্যায় প্রভা ছিল।” অনেকগুলাে চক্র ছিল, একটি অপরটিকে ভেদ করত, যা চারটি প্রাণীর সাহায্যে চালানাে হত। এ সবের উপরে “নীলকান্ত মণিবৎ আভাবিশিষ্ট এক সিংহাসনের মূর্তি ছিল; সেই সিংহাসনের মূর্তির উপরে মনুষ্যের আকৃতিবৎ এক মূর্তি ছিল। “আর করূবদের পক্ষ সকলের অধঃস্থানে মনুষ্য-হস্তের আকৃতি প্রকাশ পাইল।” যিহিস্কেল ১:৪, ২৬; ১০:৮। চক্রগুলাে এমন সূক্ষ্ম ভাবে সাজান ছিল যে, একবার দেখলেই তাদের পার্থক্য বুঝা যায় না, কিন্তু সেগুলাে নিখুঁং সমন্বয় রক্ষা করে এগিয়ে যেত। যে স্বর্গীয় প্রাণীগুলাে, করূবগণের পাখার নীচে হাত দিয়ে বহন করা হত, সেগুলাে এই চক্রগুলােকে চালাতাে; তাদের উপরে, নীলকান্তমণির সিংহাসনের ওপরে অনন্ত জীবিত ব্যক্তি বসা ছিলেন; এবং সিংহাসনের চারপাশে একটি মেঘধনু ছিল, যা স্বর্গীয় অনুগ্রহের প্রতীকEdBen 166.3

    জাতিগণের ইতিহাস যা একটির পর অন্যটি তাদের নির্দিষ্ট সময় এবং স্থান অধিকার করেছে, অজানাভাবে সত্যের বিষয় সাক্ষ্য দিচ্ছে, যার অর্থ তারা জানত না, তাই-ই আমাদের কাছে কথা বলছে। আজ প্রত্যেক জাতি এবং প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য ঈশ্বর তাঁর মহা পরিকল্পনায় একটি স্থান নিরূপণ করেছেন । আজ মানুষ এবং জাতিগণ তাঁর হাতের ওলনদণ্ডে পরিমিত হচ্ছে, যিনি কোন ভুল করেন না। সবাই তাদের নিজ নিজ মনােনয়ন দ্বারা তাদের ভাগ্য মনােনয়ন করছে, এবং ঈশ্বর তাঁর উদ্দেশ্য সম্পন্নের জন্য সবার উপরে রাজত্ব করেন।EdBen 166.4

    ইতিহাসে মহান ‘আছি’ তার নিজ বাক্যে চিহ্নিত করেছেন, একটির পর একটি ভাববাণী স্বরূপ শিকলে জুড়ে রেখেছেন, চিরন্তন অতীত হতে চিরন্তন ভবিষ্যৎ পর্যন্ত, আমাদের বলে দেয় আমরা যুগের শােভা যাত্রার কোথায় অবস্থান করছি, এবং আগামীতে আমাদের কি প্রত্যাশা রয়েছে। যা কিছু ঘটবে, এবং এ যাবৎ যা ঘটেছে, তা ইতিহাসের পাতায় লিখে রাখা হয়েছে এবং আমরা নিশ্চিত হতে পারি যে, যা কিছু ভবিষ্যতে ঘটবে তা শিকলের ধারাবাহিকতায়ই ঘটবে ।EdBen 167.1

    পার্থিব সব রাজ্যের চূড়ান্ত পতন সম্পর্কে সত্যের বাক্য পরিষ্কারভাবে ভবিষ্যদ্বাণী বলে দিয়েছে। ইস্রায়েলের সর্বশেষ রাজার বিষয়ে ঈশ্বর এই ভবিষ্যদ্বাণী বলেছিলেন: “প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, উষ্ণীষ অপসারণ কর ও রাজমুকুট দূর কর; ... যাহা খর্ব তাহা উচচ হউক, ও যাহা উচ্চ তাহা খর্ব হউক। আমি বিপর্যয়, বিপর্যয়, বিপর্যয় করিব; যাহা আছে, তাহাও থাকিবে না, যাবৎ তিনি না আইসেন, যাঁহার অধিকার; আমি তাঁহাকে দিব।” যিহিষ্কেল ২১:২৬, ২৭।EdBen 167.2

    সময় সন্নিকট। বর্তমানে যুগের লক্ষণগুলাে বলে দেয় যে, আমরা মহা, গুরুগম্ভীর ঘটনাবলির দ্বার গােড়ায় উপস্থিত। আমাদের বিশ্বের সব কিছুই অত্যন্ত বিক্ষুব্ধ। আমাদের সামনেই তার দ্বিতীয়বার আসার আগে ঘটনাগুলাের ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ হচ্ছে, “আর তােমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনবর শুনিবে; ... কারণ জাতির বিপক্ষে জাতি ও রাজ্যের বিপক্ষে রাজ্য উঠিবে, এবং স্থানে স্থানে দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হইবে।” মথি ২৪:৬, ৭।EdBen 167.3

    বর্তমান সময়টি, সমগ্র জীবজগতের কাছে একটি অদম্য আগ্রহের সময়। শাসকবর্গ এবং রাষ্ট্রীয় নেতারা, বিশেষ বিশেষ পদমর্যাদার লােকেরা, সব ধরণের চিন্তাশীল মানুষেরা আমাদের চারপাশে সংঘটিত ঘটনাগুলাের দিকে মনােযােগ দিয়ে চেয়ে আছে। তারা জাতিগুলাের মধ্যে বিরাজিত অস্থির, আন্তরিকতাশূন্য সম্পর্ক লক্ষ করছে। তারা পার্থিব প্রতিটি বিষয়বস্তুর দখলদারিত্বে তীব্রতা পর্যবেক্ষণ করছে, এবং তারা বুঝতে পারছে যে, সাংঘাতিক ও প্রতারণামূলক কিছু ঘটতে যাচ্ছে। বিশ্ব একটি বিস্ময়কর সংকটের খুব কাছে।EdBen 167.4

    দূতগণ এখন যুদ্ধের বায়ু গুটিয়ে নিচ্ছেন, যেন, যত-দিন-না পৃথিবীকে আসন্ন ধ্বংসের সতর্কবাণী জানিয়ে দেয়া হয় তত-দিন যেন তারা প্রবাহিত না হয়; কিন্তু একটি ঝড়ের আভাস দেখা যাচ্ছে; যা পৃথিবীতে বয়ে যাবার জন্য প্রস্তুত; আর ঈশ্বর যখন তার দূতদের বায়ু ছেড়ে দিতে আদেশ করবেন, তখন এমন এক সংগ্রামের দৃশ্যের অবতারণা ঘটবে যা বর্ণনাতীত।EdBen 168.1

    বাইবেল, এবং কেবল বাইবেলই, এ সব বিষয়ের সঠিক দৃশ্য বর্ণনা করে। এখানেই আমাদের বিশ্বের ইতিহাসের একটি সঠিক চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, ঘটনাবলি, যা আগে থেকেই তাদের ছায়াপাত করছে, তাদের আগমনের রব পৃথিবীকে কাপিয়ে তুলছে এবং ভয়ে মানুষের হৃদয়ে হতাশা নামে এসেছে।EdBen 168.2

    “দেখ, সদাপ্রভু পৃথিবীকে শূন্য করিতেছেন, উৎসন্ন করিতেছেন, উল্টাইয়া ফেলিতেছেন, ও তাহার নিবাসীদিগকে ছড়াইয়া ফেলিতেছেন। ...তাহারা ব্যবস্থা লঙ্ঘন করিয়াছে, বিধি অন্যথা করিয়াছে, চিরস্থায়ী নিয়ম ভঙ্গ করিয়াছে। এই কারণ অভিশাপ পৃথিবীকে গ্রাস করিল, ও তন্নিবাসিগণ দোষী সাব্যস্ত হইল;...ডফের আমােদ নিবৃত্ত হইল; উল্লাসকারীদের কোলাহল শেষ হইল, বীণার আমােদ নিবৃত্ত হইল।” যিশাইয় ২৪:১-৮। . “হায় হায়, কেমন দিন! সদাপ্রভুর দিন ত সন্নিকট; উহা সর্বশক্তিমানের নিকট হইতে প্রলয়ের ন্যায় আসিতেছে। ...বীজ সকল আপন আপন ঢেলার নীচে পচিয়া যাইতেছে; গােলা সকল ধ্বংসিত, শষ্যাগার সকল উৎপাটিত; কারণ শস্য ম্লান হইয়াছে। পশুগণ কেমন কোকাইতেছে। বৃষপাল ব্যাকুল হইতেছে, কেননা তাহাদের চরাণীস্থান নাই; মেষপালও দণ্ডভােগ করিতেছে।” “দ্রাক্ষালতা শুষ্ক ও ডুমুরবৃক্ষ ম্লান হইয়াছে; দাড়িম্ব, খর্জুর, নাগরঙ্গ ও ক্ষেত্রের সমস্ত বৃক্ষ শুষ্ক হইয়াছে, বস্তুতঃ মনুষ্য-সন্তানদের মধ্যে আমােদ শুকাইয়া গিয়াছে।” যােয়েল ১:১৫১৮; ১২।EdBen 168.3

    “আমি হৃদয়ে ব্যথিত; ...আমি নীরব থাকিতে পারি না; কেননা, হে আমার প্রাণ, তুমি তূরীর রব ও যুদ্ধের সিংহনাদ শুনিয়াছ। ধ্বংসের উপরে ধ্বংস প্রচারিত হইতেছে, ফলে সমুদয় দেশ উচ্ছিন্ন হইতেছে।”EdBen 168.4

    “আমি পৃথিবীতে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ তাহা ঘাের ও শূন্য ছিল; আমি আকাশ মণ্ডলে [দৃষ্টিপাত করিলাম] তাহার দীপ্তি ছিল না। আমি পর্বতগণের উপরে দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সে সকল কাঁপিতেছে, ও উপপর্বত সকল টলটলায়মান হইতেছে। আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, মনুষ্যমাত্র নাই, এবং আকাশের সমস্ত পক্ষী পলাইয়া গিয়াছে। আমি দৃষ্টিপাত করিলাম, আর দেখ, সদাপ্রভুর সম্মুখে ও তাঁহার জ্বলন্ত ক্রোধের সম্মুখে উদ্যান মরুভূমি হইয়া পড়িয়াছে, ও তাহার সমস্ত নগর ভগ্ন হইয়াছে।” যিরমিয় ৪:১৯, ২০, ২৩-২৬।EdBen 168.5

    “সেই দিন মহৎ, তাহার তুল্য দিন আর নাই; এ যাকোবের সঙ্কটকাল, কিন্তু ইহা হইতে সে নিস্তার পাইবে।” যিরমিয় ৩০:৭।EdBen 169.1

    “হে আমার জাতি, চল, তােমার অন্তরাগারে প্রবেশ কর, তােমার দ্বার সকল রুদ্ধ কর; অল্পক্ষণ মাত্র লুক্কায়িত থাক, যে পর্যন্ত ক্রোধ অতীতEdBen 169.2

    হয়।” যিশাইয় ২৬:২০EdBen 169.3

    “তুমি পরাৎপরকে আপনার বাসস্থান করিয়াছে, তােমার কোন বিপদ ঘটিবে না, কোন উৎপাত তােমার তম্বুর নিকটে আসিবে না।” গীত ৯১:৯, ১০ ।EdBen 169.4

    “ঈশ্বর, সদাপ্রভু ঈশ্বর কথা কহিয়াছেন,
    সূর্যের উদয়স্থান অবধি অন্তস্থান পর্যন্ত
    তিনি পৃথিবীকে আহ্বান করিয়াছেন।
    সিয়েন হইতে, পরম সৌন্দর্যের স্থান হইতে,
    ঈশ্বর দেদীপ্যমান হইয়াছেন।
    আমাদের ঈশ্বর আসিবেন, নীরব থাকিবেন না।...
    “তিনি উধ্বস্থিত স্বর্গকে ডাকিবেন ।
    পৃথিবীকেও ডাকিবেন, স্বীয় প্রজাদের বিচারের জন্য। ...
    আর স্বর্গ তাঁহার ধর্মশীলতা ত করিবে
    কেননা ঈশ্বর স্বয়ং বিচারকা।”
    EdBen 169.5

    -গীত ৫০:১-৩; ৪-৬।

    “হে সিয়ােন কন্যা ... সদাপ্রভু তােমাকে তোমার শত্রুগণের হস্ত হইতে মুক্ত করিবেন। এখন অনেক জাতি তােমার বিরুদ্ধে সমবেত হইল; তাহার বলে, সিয়ােন অশুচি হউক, আমাদের চক্ষু তাহার দশা দেখুক। কিন্তু তাহারা সদাপ্রভুর সঙ্কল্প সকল জানে না ও তাঁহার মন্ত্রণা বুঝে না” “কেননা তাহারা বলে, এ দূরীকৃতা, এ সেই সিয়ােন, যাহার অন্বেষণ কেহ করে না,” “আমি তােমার স্বাস্থ্য ফিরাইয়া আনিব, ও তোমার ক্ষত সকল ভালাে করিব, ইহা সদাপ্রভু কহেন।” “আমি যাকোবের তাম্বু সকলের বন্দি দশা ফিরাইব, ও তাহার আবাস সকলের প্রতি করুণা করিব।” মীখা ৪:১০-১২; যিরমিয় ৩০:১৭, ১৮।EdBen 169.6

    “হায়! সেই দিন লােকে বলিবে, এই দেখ, ইনিই আমাদের ঈশ্বর আমরা ইহারই অপেক্ষায় ছিলাম, ইনিই আমাদিগকে ত্রাণ করিবেন; ইনিই সদাপ্রভু; আমরা ইহারই অপেক্ষায় ছিলাম, আমরা ইহার কৃত পরিত্রাণে উল্লাসিত হইব, আনন্দ করিব।” “তিনি মৃত্যুকে অনন্তকালের জন্য বিনষ্ট করিয়াছেন, ও প্রভু সদাপ্রভু সকলের মুখ হইতে চক্ষুর জল মুছিয়া দিবেন; এবং সমস্ত পৃথিবী হইতে আপন প্রজাদের দুর্নাম দূর করিবেন; কারণ সদাপ্রভুই এই কথা কহিয়াছেন।” যিশাইয় ২৫:৯, ৮।EdBen 170.1

    “আমাদের পর্বপুরী সিয়ােনের প্রতি দৃষ্টি কর, তােমার নয়নযুগল শান্তিযুক্ত বসতিরূপ যিরূশালেমকে দেখিব, তাহা অটল তাম্বুস্বরূপ, তাহার গোজ কখনও উৎপাটিত হইবে না। ... কেননা সদাপ্রভু আমাদের। বিচারকর্তা, সদাপ্রভু আমাদের ব্যবস্থাপক, সদাপ্রভু আমাদের রাজা।” যিশাইয় ৩৩:২০-২২।EdBen 170.2

    “কিন্তু ধর্মশীলতায় দীনহীনদের বিচার করিবেন, সরলতায় পৃথিবীস্থ দের জন্য নিষ্পত্তি করিবেন।” যিশাইয় ১১:৪। ।EdBen 170.3

    তারপর ঈশ্বরের উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে; তাঁর রাজ্যের নীতিমালা সূর্যের নীচে বসবাসকারী সবার কাছে সমাদৃত হবে।EdBen 170.4

    “তােমার দেশে উন্দ্রবের কথা, তােমার সীমার মধ্যে ধ্বংস ও বিনাশের কথা; কিন্তু তুমি আপন প্রাচীরের নাম পরিত্রাণ’ রাখিবে, আপন পুরদ্বারের নাম ‘প্রশংসা রাখিবে।”EdBen 170.5

    “তুমি ধার্মিকতায় স্থিরীকৃত হইবে; তুমি উপদ্রব হইতে দূরে থাকিবে, বস্তুত তুমি ভীত হইবে না; এবং ত্রাস হইতে দূরে থাকিবে, বাস্তবিক তাহা তােমার নিকটে আসিবে না।” যিশাইয় ৬০:১৮; ৫৪:১৪।EdBen 170.6

    যে সব ভাববাদির কাছে এই সব মহান দৃশ্যগুলাে প্রকাশিত হয়েছিল, তারা গুরুত্ব বােঝার জন্য আকাঙ্ক্ষিত ছিলেন। তারা সযত্নে আলােচনা ও অনুসন্ধান করিয়াছিলেন, ... তাঁহারা এই বিষয় অনুসন্ধান করিতেন, খ্রীষ্টের আত্মা, যিনি তাঁহাদের অন্তরে ছিলেন। ... তাঁহাদের কাছে ইহা প্রকাশিত হইয়াছিল যে, তাহারা আপনাদের জন্য নয়, কিন্তু তােমাদেরই জন্য ঐ সকল বিষয়ের পরিচারক ছিলেন; ... আর স্বর্গদূতেরা হেঁট হইয়া তাহা দেখিবার আকাঙক্ষা করিতেছেন।” ১ পিতর ১:১০-১২।EdBen 170.7

    আমরা ঐ সবের পূর্ণতার একেবারে শেষপ্রান্তে এক গভীর মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছি, তাদের কাছে আসন্ন বিষয়গুলাের চিত্র প্রকাশিত হয়েছে যে সব ঘটনার জন্য আমাদের আদি পিতা-মাতা এদোন হতে বিতাড়িত হয়েছিলেন, ঈশ্বরের সন্তানেরা জেগে থেকে অপেক্ষা করেছেন, বাসনা করেছেন এবং প্রার্থনা করেছেন।EdBen 171.1

    মহান শেষকালিন ঘটনাবলির আগে, যেমন পৃথিবীর প্রথম বিনাশের আগে মানুষ বিলাসিতা এবং ইন্দ্রিয় লালসায় মত্ত ছিল; দৃশ্য এবং নশ্বর বিষয়ের মােহে আচ্ছন্ন হয়ে, তারা অদৃশ্য এবং চিরস্থায়ী বিষয় থেকে দৃষ্টিহারা হয়েছিল; একইভাবে এখন অবিনশ্বর বিষয়গুলাে জলাঞ্জলি দিয়ে তারা নশ্বর বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। তাদের মনকে উন্নত করতে হবে, তাদের জীবনের লক্ষ্যকে প্রসারিত করতে হবে। পার্থিব বিষয়ের স্বপ্নের তন্দ্রাচ্ছন্নতা হতে তাদের জেগে উঠতে হবে।EdBen 171.2

    বিভিন্ন জাতির উত্থান পতন থেকে এবং বাইবেলে পরিষ্কারভাবে লেখা বিষয় থেকে তাদের শিক্ষা করা উচিত যে, বাহ্যিক এবং জাগতিক গৌরব কত মূল্যহীন। বাবিলের সব ক্ষমতা এবং জাঁক-জমক যা আমাদের বিশ্ব সেই থেকে এ পর্যন্ত কখনও দেখে নি, যা বর্তমান কালের লােকেরা স্থায়ী বলে বিবেচনা করে- তা কত পুরােপুরিভাবে বিলীন হয়ে গেছে। “তৃণের পুষ্প” তুল্য তা বিনাশ প্রাপ্ত হয়েছে। এভাবে, যার ভীত্তি ঈশ্বর স্থাপন করে নি তার সবই ধ্বংস হবে। কেবল যা তার উদ্দেশের মধ্যে পরিবেষ্টিত এবং যা কিছু তার চরিত্র প্রকাশ করে, তা-ই টিকে থাকবে। আমাদের পৃথিবী জানে, কেবল তাঁর নীতিমালা দৃঢ়ভাবে স্থাপিত ।EdBen 171.3

    এগুলাে সেই সব মহান সত্য যা প্রাচীন এবং যুবক-যুবতিদের শিক্ষা করতে হবে। আমাদের বিভিন্ন জাতির ইতিহাস এবং আসন্ন বিষয়ের প্রকাশ প্রাপ্তির মধ্যে ঈশ্বরের উদ্দেশ্য ভিত্তিক কার্যাবলি আলােচনা করা আবশ্যক, যেন আমরা দৃশ্য ও অদৃশ্য বিষয়ের প্রকৃত মূল্য নিরূপণ করতে পারি; যেন আমরা জীবনের প্রকৃত লক্ষ্য কি তা জানতে পারি; যেন, অনন্তকালের আলােকে, বিষয়গুলাে প্রত্যক্ষ করে, আমরা সেগুলাের যথাযথ আদর্শরূপে ব্যবহার করতে পারি। এভাবে এই স্থানে তার রাজ্যের নীতিমালা শিক্ষা কওে, এবং রাজ্যের প্রজা ও নাগরিক হয়ে, আমরা তার আগমনে প্রস্তুত থাকতে পারি, যেন আমরা তার অধিকারে প্রবেশ করতে পারি ।EdBen 171.4

    সেই দিন খুব কাছে। পাঠ্য বিষয়গুলাে শিক্ষা লাভ করতে হবে, কাজ শেষ করতে হবে, চরিত্রের পরিবর্তন সাধন করতে হবে, কারণ সময়, খুবই সীমিত।EdBen 172.1

    “দেখ, ইস্রায়েল-কুল বলে, ঐ ব্যক্তি যে দর্শন পায়, সে অনেক বিলম্বের কথা; সে দূরবর্তী কালের বিষয় ভাববাণী বলিতেছে। এই জন্য তুমি তাহাদিগকে বল, প্রভু সদাপ্রভু এই কথা কহেন, আমার সমস্ত বাক্য সফল হইতে আর বিলম্ব হইবে না; আমি যে বাক্য বলিব, তাহা সফল হইবে; ইহা প্রভু সদাপ্রভু কহেন।” যিহিকেল ১২:২৭, ২৮ ।EdBen 172.2