Loading...
Larger font
Smaller font
Copy
Print
Contents
পিতৃকুলপতিগণ ও ভাববাদীগণ - Contents
  • Results
  • Related
  • Featured
No results found for: "".
  • Weighted Relevancy
  • Content Sequence
  • Relevancy
  • Earliest First
  • Latest First
    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents

    ১৭—যাকোবের পলায়ন ও নির্বাসন

    এষৌ দ্বারা নিহত হবার ভয়ে ভীত যাকোব তার পিতার বাড়ী হতে পলায়ন করলেন বটে, তবে পিতার আশীর্বাদ নিয়েই পলায়ন করলেন । ইস্হাক তার নিকট চুক্তির প্রতিজ্ঞা পুনরাবৃত্তি করেছিলেন এবং তাকে আদেশ করেছিলেন যে সেও যেন মেশোপটেমিয়ার তার মায়ের বংশের যে কোন মেয়েকে স্ত্রী রূপে গ্রহণ করে । PPBeng 123.1

    তথাপি গভীর নৈরাশ্যজনক হৃদয় নিয়ে যাকোব তার নিঃসঙ্গ যাত্রা শুরু করেন। শুধু মাত্র হাতের লাঠি নিয়ে তাকে ধন্য, যাযাবর, জাতি দ্বারা অধ্যুসিত দেশের শত শত মাইল ভ্রমণ করতে হবে। যেন তার ক্রুদ্ধ ভাই তার খোঁজ না পায় তাই তিনি অনুতপ্ত ও ভীত হৃদয়ে মানুষের সাক্ষাৎ হতে দূরে থাকতে চাইলেন । তিনি এই ভেবে ভয় পেলেন যে হয়ত ঈশ্বর যে আশীর্বাদ তাকে দিতে চেয়েছেন, তা তিনি চিরকালের মত হারিয়ে ফেলেছেন, আর শয়তান তার খুব নিকটে থেকে এ বিষয়ে তাকে প্রলোভিত করছিল । PPBeng 123.2

    দ্বিতীয় দিনের সন্ধ্যা তাকে তার পিতার তাঁবু হতে অনেক দূরে দেখতে পেল । তিনি জানতেন যে তিনি একজন সমাজ হতে বিতাড়িত ব্যক্তি, আর তিনি এও বুঝতে পারলেন যে তার নিজের ভুল কাজের ফলেই তিনি বর্তমান সমস্যায় পতিত হয়েছেন। নৈরাশ্য তার আত্মায় চেপে বসল, এবং তিনি প্রার্থনা করতেও ভয় পেলেন। কিন্তু তিনি এমন একাকী ছিলেন যে তিনি জীবনে কখনও যত গভীর ভাবে অনুভব করেন নি, তত গভীর ভাবে তিনি ঈশ্বরের সংরক্ষণের প্রয়োজন অনুভব করলেন। তিনি কেঁদে নিজের পাপ স্বীকার করলেন, এবং তিনি যে সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত হননি তার যে কোন একটি প্রমাণের জন্য আকুল অনুরোধ জানালেন। তিনি নিজের উপর আত্ম-বিশ্বাস সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেছিলেন, এবং তিনি ভয় পেয়েছিলেন যে ঈশ্বর তাকে চিরকালের তখনও তার বিপথগামী, মত পরিত্যাগ করেছেন। কিন্তু ঈশ্বরের অনুগ্রহ PPBeng 123.3

    অবিশ্বস্ত সন্তানের প্রতি ন্যাস্ত ছিল। সদাপ্রভু মহা অনুকম্পায় যাকোবের যা প্রয়োজন ছিল তাই প্রকাশ করলেন একজন মুক্তিদাতা । তিনি পাপ করেছিলেন, কিন্তু তিনি দেখলেন যে একটি পথ প্রকাশিত হল যা দিয়ে তিনি ঈশ্বরের অনুগ্রহের সীমার নীচে পুনঃস্থাপিত হতে পারতেন। PPBeng 123.4

    ক্লান্ত পরিব্রাজক ভূমিতে শুয়ে পড়লেন, এবং একটি পাথর তার বালিশ হল । আর ঘুমন্ত অবস্থায় তিনি একটি সিঁড়ি দেখতে পেলেন যার ভিত্তি ছিল পৃথিবীতে ও মাথা ছিল স্বর্গে। আর এই সিঁড়ি দিয়ে দূতগণ উঠানামা করছিলেন। আর এর উপরে ছিলেন মহিমাময় ঈশ্বর এবং স্বর্গ হতে তার ধ্বনি শুনা গেল, “আমি সদাপ্রভু, তোমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর ও ইস্হাকের ঈশ্বর” “তোমাতে ও তোমার বংশে পৃথিবীর যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্বাদ প্রাপ্ত হইবে।” এই প্রতিজ্ঞা অব্রাহাম ও ইস্হাককে দেয়া হয়েছিল, আর এখন ইহা যাকোবের নিকট নূতন করে করা হল। তখন উৎসাহ ও শান্তির বাণী উচ্চারণ করা হল,” আর দেখ আমি তোমার সহবর্তী, যে যে স্থানে তুমি যাইবে, সেই সেই স্থানে তোমাকে রক্ষা করিব, ও পুনর্বার এই দেশে আনিব; কেননা আমি তোমাকে যাহা যাহা বলিলাম, তাহা যে পর্য্যন্ত সফল না করি, সেই পর্য্যন্ত তোমাকে ত্যাগ করিব না।” সদাপ্রভু তাঁর করুণায় অনুতপ্ত পলাতকের নিকট ভবিষ্যৎ তুলে ধরলেন, যেন সে যখন পৌত্তলিক ও কুচক্রী লোকদের মধ্যে একা বাস করে তখন যেন সে প্রলোভনে না পড়ে। তার মাধ্যমে যে ঈশ্বরের লক্ষ্য পূর্ণ হচ্ছে এই জ্ঞান তাকে বিশ্বস্ত ও বিশ্বাসী থাকতে উৎসাহিত করবে। PPBeng 124.1

    এই স্বপ্নে ইস্হাককে পরিত্রাণের সেই সকল অংশ দেখানো হয়েছিল, যা ঐ সময় তার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ছিল। এই রহস্যপূর্ণ সিঁড়ি ছিল সেই সিঁড়ি যীশু খ্রীষ্ট যার কথা নথনেলের সহিত আলোচনা কালে উল্লেখ করেছিলেন, “তোমরা দেখিবে, স্বর্গ খুলিয়া গিয়াছে, এবং ঈশ্বরের দূতগণ মনুষ্য পুত্রের উপর দিয়া উঠিতেছেন ও নামিতেছেন।” আদম ও হবার পাপ পৃথিবীকে স্বর্গ হতে পৃথক করেছিল, যেন মানুষ তার স্রষ্টার সাথে যোগাযোগ স্থাপন করতে না পারে। তথাপি পৃথিবীকে নৈরাশ্যের মধ্যে ফেলে রাখা হয়নি। সিঁড়িটি যীশু খ্রীষ্টের প্রতিনিধিরূপে প্রকাশিত হয়েছিল, কেননা যীশুই ছিলেন যোগাযোগ স্থাপনের মাধ্যম। নিজ দুর্বলতা ও অসহায়তার মধ্যে মানুষকে খ্ৰীষ্ট অসীম ক্ষমতার সাথে সংযুক্ত করেন । PPBeng 124.2

    এই সমস্তই যাকোবকে তার স্বপ্নের মধ্যে প্রকাশ করা হয়েছিল । যদিও তার মন ঐ স্বপ্নের মাত্র কিছু অংশই তাৎক্ষণিক ভাবে বুঝতে সক্ষম হয়েছিল, এর মহান ও রহস্যপূর্ণ সত্য তার সমস্ত জীবনের অধ্যয়নের বিষয় ছিল এবং এর জ্ঞান তিনি ধীরে ধীরে হৃদয়ে গ্রহণ করতে পেরেছিলেন । PPBeng 124.3

    যাকোব রাতের গভীর স্তব্ধতার মধ্যে জেগে উঠলেন। স্বপ্ন অদৃশ্য হলো। নির্জীব পাহাড়ের রূপরেখা ও আকাশের উজ্জ্বল তারা তার দৃষ্টিতে পড়ল কিন্তু তার মনে এক গভীর ভাব এল যে ঈশ্বর তার সাথে আছেন। তিনি বললেন, “অবশ্য সদাপ্রভু এই স্থানে আছেন, আর আমি তাহা জ্ঞাত ছিলাম না ।...এ নিতান্তই ঈশ্বরের গৃহ, এ স্বর্গের দরজা।” PPBeng 125.1

    “পরে যাকোব প্রত্যুষে উঠিয়া বালিশের নিমিত্তে যে প্রস্তর রাখিয়াছিলেন, তাহা লইয়া স্তম্ভরূপে স্থাপন করিয়া তাহার উপর তৈল ঢালিলেন।” আর তিনি ঐ স্থানের নাম রাখলেন বৈথেল, অথবা, “ঈশ্বরের গৃহ” । আর তখন তিনি এই মহ প্রতিজ্ঞা করলেন, “যদি ঈশ্বর আমার সহবর্তী হন, আমার এই গন্তব্য পথে আমাকে রক্ষা করেন, এবং আহারার্থে খাদ্য ও পরিধানার্থে বস্ত্র দেন, আর আমি যদি কুশলে পিত্রালয়ে ফিরিয়া আসিতে পাই, তবে সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর হইবেন এবং এই যে প্রস্তর আমি স্তম্ভরূপে স্থাপন করিয়াছি, ইহা ঈশ্বরের গৃহ হইবে; আর তুমি আমাকে যে কিছু দিবে, তাহার দশমাংশ আমি তোমাকে অবশ্য দিব।” PPBeng 125.2

    যাকোবও ঈশ্বরের সহিত কোন চুক্তি স্থাপন করছিলেন না। ঈশ্বরও তাকে উন্নতির প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, আর এই প্রতিজ্ঞা ছিল ঈশ্বরের অনুগ্রহের নিশ্চয়তার জন্য কৃতজ্ঞ অন্তঃকরণের বহিঃপ্রকাশ। যাকোব অনুভব করেছিলেন যে ঈশ্বরের অনুগ্রহের বিশেষ দয়ার জন্য একটা কিছু দান করা উচিত । PPBeng 125.3

    যেহেতু যখন তার নিকট সকল কিছুই অন্ধকার ও প্রতিকূল মনে হচ্ছিল, তখন ঈশ্বর তার কাছে নূতন দ্বার খুলে দিয়েছিলেন, যখন সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিল তখন ঈশ্বর তাকে নূতন জীবন দান করেছিলেন, তাই প্রত্যেক বিশ্বাসীর উচিত কৃতজ্ঞতার সহিত সেই সকল মহামূল্য মুক্তি প্রায়ই স্মরণ করা। অসংখ্য আশীর্বাদের জন্য তার প্রশ্ন করা উচিত, “আমি সদাপ্রভু হইতে যে সকল মঙ্গল পাইয়াছি, তাহার পরিবর্তে তাঁহাকে কি ফিরাইয়া দিব?” গীতসংহিতা ১১৬ঃ১২। PPBeng 125.4

    Larger font
    Smaller font
    Copy
    Print
    Contents